অগ্নিকাণ্ডে বা দুর্ঘটনায় কোথায় ফোন করবেন

অগ্নিকাণ্ডে বা দুর্ঘটনায় কোথায় ফোন করতে হবে তা অনেকেরই অজানা।

অনেকেই জানেন না, অগ্নিকাণ্ডে বা দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করতে হয়। তারা জানেন না যে, তথ্য পাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস গাড়ি-পাম্প ও জনবল নিয়ে অগ্নিকাণ্ডস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়।

আগুন লাগার সংবাদ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফায়ার সার্ভিসকে দেরিতে দেওয়া হয়। বেশির ভাগ মানুষের কাছেই নেই ফায়ার সার্ভিসের ফোন নাম্বার। তাই এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে উন্নয়ন মেলা থেকে। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের হাতে ফায়ার সার্ভিসের স্টল থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে সারা দেশের ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ফোন ও মোবাইল নাম্বারের একটি লিফলেট ও স্টিকার। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক আরেকটি লিফলেট।

সোমবার সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলা। এ মেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টলে প্রদর্শন করা হয়েছে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারের যন্ত্রপাতি।

এই স্টলে থাকা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর মো. শামীম বলেন, আমরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবেলায় যে ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি তা এখানে প্রদর্শন করেছি। কোনটি দিয়ে কী কাজ করা হয়, কেউ জানতে চাইলে তা জানানো হয়। এছাড়া আমাদের স্টলে যারা আসছেন, তাদের সচেতন করার জন্য দুটি লিফলেট ও একটি স্টিকার দিচ্ছি। তাতে সচেতনতামূলক বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ফোন ও মোবাইল নাম্বার রয়েছে।

লিফলেটে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নাম্বার দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘যে কোন বিপদে সংবাদ দিন, সেবা নিন।’

যে কোনো জরুরি অবস্থায় যোগাযোগ করুন-

ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের (ঢাকা) ফোন নাম্বার- ০২-৯৫৫৫৫৫৫, ০২-৯৫৫৬৬৬৬, ০২-৯৫৫৬৬৬৭, ০২-৯৫৫১৩০০, মোবাইল নাম্বার-০১৭৩০-৩৩৬৬৯৯, ০১৭১৩-০৩৮১৮১, ০১৭১৩-০৩৮১৮২।

চট্টগ্রাম কন্ট্রোল রুম- ০৩১-৭১৬৩২৬, ০৩১-৭১৬৩২৭, ০৩১-২৫২১১৫২, ০৩১-২৫২১১৫৩, মোবাইল- ০১৭৩০-৩৩৬৬৬৬।

রাজশাহী কন্ট্রোল রুম- ০৭২১-৭৭৪২২৪, ০৭২১-৭৭৪২৯৩, মোবাইল- ০১৭৩০-৩৩৬৬৫৫।

খুলনা কন্ট্রোল রুম-০৪১-৭৬০৩৩৩, ০৪১-৭৬০৩৩৫, মোবাইল-০১৭৩০-৩৩৬৬৭৭।

সিলেট কন্ট্রোল রুম-০৮২১-৭২৭৯৭৬, মোবাইল-০১৭৩০-৩৩৬৬৪৪।

বরিশাল কন্ট্রোল রুম-০৪৩১-২১৭৭০১২, ০৪৩১-২১৭৭০১৫।

রংপুর কন্ট্রোল রুম-০৫২১-৫৬০০১ মোবাইল-০১৭৩২-৭০৭১৭২।

ময়মনসিংহ কন্ট্রোল রুম- ০৯১-৬৭৪৪৪।

অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নিনির্বাপণ, সড়ক, নৌ ও রেল দুর্ঘটনাসহ সব দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজ পরিচালন, ভূমিধস ও বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহন, জনসাধারণকে প্রশিক্ষণ প্রদান, ভিভিআইপিদের অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সার্ভে ও মহড়া পরিচলনা, বহুতল ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত ছাড়পত্র প্রদান, শিল্পকারখানা/ওয়ার্কশপ/ওয়্যারহাউজের জন্য ফায়ার লাইসেন্স প্রদানসহ বিভিন্ন সেবা কাযক্রম পরিচালনা করে থাকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর মাহমুদ জানান, সারাদেশে ফায়ার সার্ভিসের ৩১৭টি স্টেশন রয়েছে। জনবল রয়েছে আট হাজার। তিনি বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে রওনা হয়। তবে যানজট ও অপ্রশস্ত রাস্তার কারণে অনেক সময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি অগ্নিকাণ্ডস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়।

আগুন লাগার পর বিভিন্ন সমস্যায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে দেরি হতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসার আগপর্যন্ত কিছু কাজ করতে এই উন্নয়ন মেলা থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সেগুলো হলো, আগুনের সূচনাতেই অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ওপর পানি নিক্ষেপ করতে হবে। তেলজাতীয় আগুনে কম্বল, কাঁথা, ছালা বা মোটা কাপড় ভিজিয়ে চাপা দিতে হবে। বৈদ্যুতিক আগুনে দ্রুত প্রধান সুইচ বন্ধ করতে হবে। পরনের কাপড়ে আগুন লাগলে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে হবে। দৌড়ানো যাবে না, দৌড়ালে আগুন বেড়ে যাবে। আগুনে বিস্তার রোধে আশপাশের দাহ্য বস্তু সরিয়ে ফেলতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত আগুনের মোকাবেলা করতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই