অচল শাহবাগ, প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষার্থীরা

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে এবং পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছে আন্দোলনকারীরা। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা দেয়।

রোববার সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে দুপুর ১২ টা ৩৫ মিনিটে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা দিলে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ বেরিকেড দিয়ে বাধা দেয়। পরবর্তীতে তারা ব্যারিকেড ভেঙ্গে এগিয়ে শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নেয়। এসময় তারা চতুর্মুখী অবস্থান নিয়ে শাহবাগের সড়ক অবরোধ করে। এরফলে শাহবাগের সব রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

এসময় রমনা জোনের এডিসি আবদুল বাতেন ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে সেখান থেকে সরে জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিতে বললেও তারা সেখান থেকে সরেননি।

পরবর্তীতে দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে একটি প্রতিনিধিদল পুলিশের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী আসিফ বিন ত্বাকী, আবু সাঈদ দোসর, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল হক লিয়ন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাজিয়া আক্তার মাইফুল এবং শারমীন আক্তার পিংকি। প্রতিনিধিদলে অভিভাবকদের পক্ষে ছিলেন অধ্যক্ষ আশরাফ কামাল এবং ড. বোরহান উদ্দীন।

প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে এবং পুনঃপরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফেরত না আসা পর্যন্ত তারা শাহবাগের রাস্তা থেকে একচুল ও নড়বেন না। প্রায় তিন শতাধিক মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন অনেক অভিভাবকও।

শাহবাগে আন্দোলনকারীদের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা জোনের এডিসি শিবলী নোমান বলেন, ‘আমরা চাই শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করুক। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে তারা তাদের আন্দোলন করতে পারে। আমরা তাদেরকে সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু তারা যা করছে তা তো জনগণেরই ক্ষতি করছে। আমরা তাদেরকে বলেছি রাস্তা ছেড়ে দিয়ে জাদুঘরের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে।’

এদিকে, মেডিকেল ভর্তিচ্ছু সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুসারে কার্যক্রম চালাতে পারছে না বলে জানা গেছে।

রোববার সকাল থেকেই আন্দোলনকারীদের সাথে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীদেরকে দেখা গেছে। তারা সেখানে আন্দোলনকারীদের সাথেই অবস্থান করছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সারাদেশের সব মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজসমূহের ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হলে পরদিন প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ এনে আন্দোলন শুরু করে কয়েকজন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী। আন্দোলনের প্রায় ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে কোন ধরণের সহায়তার আশ্বাস পাননি শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষার ফল বাতিল করে পুনঃপরীক্ষার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হলেও তা আদালতে খারিজ হয়ে গেছে।



মন্তব্য চালু নেই