অতিরিক্ত প্রোটিন খেয়ে ফেলছেন না তো আপনি?

আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের খাবারের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে ভাত। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা ইদানিং এত বেশি কার্ব না খেয়ে অন্যান্য খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছেন এবং দেখা যায়, অনেকেই প্রোটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কী পরিমাণে প্রোটিন আসলে আমাদের খাওয়া উচিৎ? আমরা খুব বেশি প্রোটিন খেয়ে ফেলছি না তো?

এ ব্যাপারে কথা হয় আদ-দ্বীন হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার তাহমিনা খন্দকারের সাথে। ডাক্তার তাহমিনার মতে, প্রত্যেকেরই উচিৎ নিজের ওজন অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন খাওয়া। আপনার ওজন, সারাদিনের কাজের পরিমাণ, আপনার কোনো শারীরিক জটিলতা বা পরিস্থিতির ওপরে নির্ভর করে আপনার প্রোটিন খাওয়ার পরিমাণ অন্যদের চাইতে কম বা বেশি হতে পারে। ঠিক কতটুকু প্রোটিন আপনার খাওয়া উচিৎ, তা বের করে নিতে পারেন একটি ছোট্ট নিয়মে।

আপনার ওজন হিসেব করে নিন কেজিতে। আপনি যদি শারীরিকভাবে খুব একটা সক্রিয় না হন, যেমন আপনি যদি সারাদিন বাড়িতেই কাটান অথবা অফিসে থাকলেও বসেই থাকেন, তেমন একটা হাঁটাচলা হয় না তাহলে এই সংখ্যাকে ০.৮ দিয়ে গুণ করুন। আপনি মোটামুটি সক্রিয় বা গর্ভবতী হয়ে থাকলে ১.৩ দিয়ে গুণ করুন। আর খুব বেশি সক্রিয় হয়ে থাকলে, যেমন দৈনিক জিম করলে বা অ্যাথলিট ধরণের কোনো পেশায় থাকলে ওজনকে ১.৮ দিয়ে গুণ করে নিন। গুণ করার পর যে সংখ্যাটি পাবেন, তত গ্রাম প্রোটিন আপনার প্রতিদিন খাওয়া উচিৎ।

সাধারণ গাইডলাইন হিসেবে আমেরিকায় বলে হয় ১৯-৭০ বছর বয়সী নারীদের ৪৬ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিৎ প্রতিদিন। কিন্তু আপনার ওজন, সক্রিয়তা এবং শারীরিক অবস্থার ওপরে ব্যাপারটা নির্ভর করে। আপনি দেখে নিতে পারেন Popsugar এর এই চমৎকার চার্টটি থেকে। অথবা আপনি নিজের ওজন এবং সক্রিয়তা থেকে হিসেব করে বের করে নিতে পারেন।

WebMD এর একটি পরামর্শ অনুসারে, আমাদের হাতের তালুর সমান আকৃতি এবং পুরুত্বের সমান পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম খাওয়া যেতে পারে। অন্য দিক দিয়ে দেখলে, এমনভাবে খেতে হবে যেন আমাদের প্লেটের তিনভাগের এক ভাগ জুড়ে থাকে প্রোটিন, তার বেশি নয়। দিনে একবার বেশি করে প্রোটিন না খেয়ে বার বার অল্প করে প্রোটিন খাওয়াটা ভালো।

যথেষ্ট প্রোটিন না খেলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা। ছোট শিশুরা মায়ের দুধের প্রোটিন না পেলে তাদের মাঝে দেখা দিতে পারে মারাসমাস এবং কোয়াশিয়রকর নামের রোগগুলো। তবে বেশি প্রোটিন খেলে কিডনিতে চাপ পড়ে বলে যাদের কিডনির সমস্যা আছে বা ডায়াবেটিস আছে তাদেরকে কম প্রোটিন খেতে বলা হয়, জানান ডাক্তার তাহমিনা। এছাড়াও গাউট বা গেঁটেবাত হলে প্রোটিন খাওয়া সম্পূর্ণ মানা করে দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।

পরামর্শদাতা
ডাক্তার তাহমিনা খন্দকার তন্বী
এমবিবিএস
আদ-দ্বীন হাসপাতাল, মগবাজার, ঢাকা

লেখক: কে এন দেয়া



মন্তব্য চালু নেই