অতিরিক্ত রাগ কমাতে যা করবেন

কিছুটা রাগ থাকা স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত রাগের কারণে যদি কারো সংসার ভেঙে যায়, তিনি যদি চাকরিচ্যুত হন কিংবা মানসিক রোগে ভোগেন, তাহলে অবশ্যই তাঁকে সচেতন হতে হবে। জেনে নিন কীভাবে৷

নিজের সাথে বোঝাপড়া

যাঁর অতিরিক্ত রাগ, তাঁকে অনেকেই ভয় পায় বা তাঁকে সবকিছু থেকে একটু দূরে রখতে চায়৷ যিনি রেগে যান, তাঁর জন্য এটা অবশ্যই আনন্দের নয়৷ তাই অতিরিক্ত রাগের মানুষকে নিজের সাথে বোঝাপড়া করতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে তাঁর রাগের আসল কারণ।

মনকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিন

রাগ বাড়ে সাধারণত মানসিক চাপ থেকে৷ এ রকম অবস্থায় গান শুনুন, ভালো কোনো বই পড়তে বসুন৷ এছাড়া ছবি আঁকতে বা রং করতেও পারেন৷ বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, ছবি রং করলে মন শান্ত হয়৷ আর তাই তো যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে বই অর্ডার দেওয়ার লিস্টের এক নম্বরে প্রায়ই বড়দের ছবি রং করার বই থাকতে দেখা যায়৷ আর এই ট্রেন্ড এখন জার্মানিতেও এসেছে৷

শিশুর রাগ

অনেকের মধ্যে শিশু বয়স থেকেই রাগে লক্ষণ দেখা যায়৷ অনেক শিশু ছোট-খাটো জিনিস না পেলেই জেদ বা চিৎকার করে৷ এটা থেকেই কিন্তু রাগের শুরু৷ অনেক মা-বাবা আদর করে তখন কিছু বলেন না বা মনে করেন বড় হলে এই রাগ চলে যাবে৷

তবে শিশু মনোচিকিৎসকরা জানান, পরবর্তীতে আরো বড় দুঃখ বা কষ্টের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য শিশুকে ছোটবেলা থেকেই তার ‘সীমানা’ তা তাকে জানিয়ে দিতে হবে৷ একমাত্র তবেই সে তা বুঝতে শিখবে৷

ব্যায়াম

অতিরিক্ত রাগ, জেদ বা ক্রোধ কমাতে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন৷ এই যেমন জগিং, বক্সিং, যোগচর্চা বা অন্যকিছু৷ বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকাল এবং মধ্যবয়সে যখন শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, তখন নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই উপকারী৷

রাগ কমাতে প্রকৃতি

মনকে শান্ত করতে প্রকৃতির জুড়ি নেই৷ আর তা শুধু শুনে বা পড়ে নয়, নিজে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে পারেন৷ কারো সাথে ঝগড়া হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলে বা ঝগড়া হওয়ার পরে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে থেকে জোর জোরে হেঁটে আসুন, দেখবেন ঘণ্টা খানেকের মধ্যে রাগ পড়ে গিয়ে মন অনেকটাই শান্ত হয়ে গেছে৷

কারণ খুঁজতে হবে

তেমন বড় কোনো কারণ ছাড়াই দেখা যায় অনেক স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে ক’দিন পরপরই অতিরিক্ত রাগের কারণে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়৷ জার্মান মনস্তত্ত্ববিদ হাইকে স্ট্যুভেল জানান, এক্ষেত্রে রাগের কারণ খুঁজে বের করে আলোচনার মাধ্যমে রাগ কমাতে হবে৷ এমনকি প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নেয়া যেতে পারে৷ তা না হলে মা-বাবার রাগ সন্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং পরবর্তীতে এর ফল পুরো পরিবারকে ভোগ করতে হতে পারে৷

ঘটতে পারে…

অতিরিক্ত রাগ ও উত্তেজনায় রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে৷ এমনকি তা থেকে ঘটে যেতে পারে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো ঘটনাও৷ তাই রাগী মানুষরা যতটা সম্ভব হাসিখুশি থাকুন এবং রাগকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন৷

সবকিছু গুছিয়ে রাখুন

যে কাজগুলো বেশি ঝামেলার মনে হয় বা যে সব কাজে সময় বেশি লাগে, সেগুলো সম্ভব হলে আগে থেকেই করে নিন অথবা গুছিয়ে রাখুন৷ জার্মান মনস্তত্ত্ববিদ হাইকে স্ট্যুভেলের কথায়, জরুরি কাজগুলো গোছানো থাকলে মন এমনিতেই শান্ত থাকবে৷ ফলে উত্তেজিত হবার বা রাগ বাড়ার তেমন কোনো কারণ থাকবে না৷-ডিডব্লিউ



মন্তব্য চালু নেই