অত্যাচারের তীব্রতা বেড়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু থানাধীন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোয় সে দেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশের অত্যাচারের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নির্যাতন সইতে না পেরে অনেকে রাতের আঁধারে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে কক্সবারের টেকনাফ ও উখিয়ার দুটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন। সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনেই প্রায় দেড় হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এ দেশে অনুপ্রবেশ করেছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে সাত শতাধিক আশ্রয় নিয়েছেন উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে। ৫ শতাধিক আশ্রয় নিয়েছেন টেকনাফের লেদা ক্যাম্পে এবং বাকিরা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে বিজিবির চাপ থাকায় ক্যাম্পে আসা রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ তথ্য দিতে চাচ্ছেন না আগে থেকে আসা রোহিঙ্গা ও তাদের নেতারা। সংখ্যা না জানালেও তারা স্বীকার করেছেন বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গারা রাতের আঁধারে পালিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। নির্যাতিতরা জানিয়েছেন, সে দেশে নির্যাতনের তীব্রতা আরও বেড়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন টেকনাফ ও উখিয়ার অনিবন্ধিত ক্যাম্পে। সেখানে চলছে তাদের এক মানবেতর জীবন-সংগ্রাম। তিল ধারণেরও ঠাঁই নেই ক্যাম্পে। মঙ্গলবার টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত ক্যাম্প ঘুরে এবং ক্যাম্পে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ওপর সেদেশে এখন কী ধরনের নিপীড়ন চলছে, তার বর্ণনা পাওয়া গেছে।

স্বামী আর পাঁচ মাসের শিশুসন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে সুখের সংসার ছিল মোহসেনা বেগমের। কিন্তু এক সকালে ভেঙে যায় তার সেই সুখের সংসার। কিছু বুঝে উঠার আগেই স্বামীসহ পরিবারের ৩ জন পুরুষ সদস্যকে ধরে নিয়ে যায় সেনারা। বাড়িতে আগুন দেয়ার পর নারীদের নিয়ে যায় ধানক্ষেতে। দিনদুপুরে সেখানে তাদের ওপর চলে পাশবিক ধর্ষণ। কতজন সেনা তাকে ধর্ষণ করেছে, তা সঠিক বলতে পারেন না তিনি। গণধর্ষণের শিকার মোহসো একসময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সন্তানের কান্নার শব্দে তার জ্ঞান ফিরে। চোখ মেলে দেখতে পান, কিছু দূরে ধানক্ষেতে পড়ে আছে তার আদরের একমাত্র সন্তান আরকান। মোহসেনা বলেন, সেনাবাহিনী শুধু তাকে ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার জ্ঞান ফিরলে ধানক্ষেতে আরও অনেক নারীকে পড়ে থাকতে দেখি। তিনি জানান, ঘটনার দিন বাড়ির নারীরা সকালের খাবার-দাবার প্রস্তুত করছিল। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের বাড়ির উঠোনে প্রবেশ করে। স্বামী ও ভাসুরসহ ৩ পুরুষ সদস্যকে চোখ, মুখ, হাত বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে খবর পান, তাদের হত্যা করা হয়েছে। এরপর ঘরে আগুন দিয়ে নারীদের ওপর চলে পাশবিক নির্যাতন।

মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এভাবেই নির্যাতনের বর্ণনা দেন রাখাইন রাজ্যের মংডু উত্তর জাম্বনিয়া গ্রামের মোহসেনা বেগম। এ সময় তার কোলে ছিল ৫ মাসের শিশু আরকান। সোমবার মা-ভাইদের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তের উনচিপ্রাং এলাকা দিয়ে টেকনাফে আসেন তিনি। সেখান থেকে আশ্রয় নেন লেদা ক্যাম্পের কবির আহমদের ঘরে। মোহসেনা জানান, তিনি হারিয়েছেন স্বামী, ভাসুর, বাবা, জ্যাঠা, চাচাসহ অনেককে। মোহসেনার স্বামীর নাম আবদু শুক্কুর। তিনি চাষাবাদ করেই তাদের সংসার চলতেন। নিজের সম্ভ্রমহানি ও স্বামী-নিকটাত্মীয়দের হারানোর পর সন্তানকে কোলে তুলে নিয়েই আশ্রয় নেন পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে। সেখানে তিন দিন তিন রাত ছিলেন তিনি। খাবার ছিল না। পাহাড়ে পালিয়ে দুই দিন না খেয়ে আত্মগোপন করে থাকেন। দুইদিন পর সেনারা অন্য গ্রামে চলে গেলে ভাই খায়ের মোহাম্মদ গ্রামের আশপাশের ধানক্ষেত ও পাহাড় থেকে পরিবারের বেঁচে যাওয়া শিশু ও নারীদের খুঁজে বের করেন।

এরপর প্রায় ৭ দিন একের পর এক বিভিন্ন গ্রামে আত্মগোপন করে করে উত্তরদিকে এগোতে থাকেন এবং বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথ খুঁজতে থাকেন। এভাবে প্রথমে কেয়ারিপ্রাং, তারপর নেড়িবিল, কুয়ারবিল, কিয়ামং হয়ে কুমিরখালী সীমান্ত দিয়ে সোমবার টেকনাফের উনচিপ্রাং সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন। আসার পথে গ্রামের সচ্ছল মানুষদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা সংগ্রহ করেন। সেই টাকা দালালদের দিয়ে নাফ নদী পাড়ি দেন তারা। আশ্রয় নেন লেদা ক্যাম্পের কবিরের ঘরে। কবির ধারকর্জ করে তাদের খাওয়াচ্ছেন। কবির জানান, আশ্রয় নেয়া লোকগুলো তার কোনো আত্মীয় নন। তারপরও মানবতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দিয়েছেন ও খাওয়াচ্ছেন। ক্যাম্পের হাসপাতালে মোহসেনার চিকিৎসাও করিয়েছেন তিনি।

ক্ষুধার জ্বালায় মাকে ফেলে আসে ৫ বছরের শিশু

ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে মাকে রাখাইন রাজ্যে ফেলে চলে আসে ৫ বছরের দিলচেমনআরা। পরে সোমবার মা বেগম বাহারও সীমানা পাড়ি দিয়ে টেকনাফে চলে এলে লেদা ক্যাম্পে মা-মেয়ের দেখা হয়। মঙ্গলবার লেদা ক্যাম্পের এলানবাহারের ঘরে আশ্রয় নেয়া এ পরিবারটির সঙ্গে কথা হয়। বেগম বাহার জানান, মংডু বুড়া সিকদারপাড়া এলাকায় ছিল তাদের বসবাস। সহিংসতা শুরুর প্রথমদিকে ৯ অক্টোবর বিজিপি ক্যাম্পে হামলার পরই তাদের গ্রাম আক্রান্ত হয়। এ সময় তার চার সন্তান আইয়াজ, হাশিম, ইদ্রিস, ইলিয়াছকে ধরে নিয়ে যায় সেনারা। এরপর প্রায় দেড় মাস পর্যন্ত সেখানে বিভিন্ন গ্রামে, ধানক্ষেতে আশ্রয় নিয়ে দিন কাটান তারা। অভুক্ত অবস্থায় ধানক্ষেতে কাঁচা ধান খেয়ে থেকেছেন অনেক দিন। কাঁচা ধান চিবিয়ে খেতে গিয়ে গালে ঘা পড়ে গেছে তার।

এভাবে পালিয়ে আত্মগোপন করে থাকতে গিয়ে একপর্যায়ে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ৫ বছরের ছোট মেয়ে দিলচেমনআরা শনিবার মাকে ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে বোনদের সঙ্গে। দিলচেমনআরা এখনও খাকি প্যান্ট পরা কাউকে দেখলে ভয়ে আঁতকে উঠে। এ দেশে পরিবারের বড়দের মৃত্যুভয় কেটে গেলেও রয়েছেন অনেকটা বন্দি জীবনে। একটা ঘরে গাধাগাধি করে থাকছেন আশ্রয় নেয়া ৮ জন। ক্যাম্পের লোকদের কাছ থেকে খাবার জোগাড় করে খাচ্ছেন।

সন্তান ফেলে পালিয়ে এসেছেন লায়লা : বুকের ধন সন্তান ফেলে আগুনে দগ্ধ হওয়ার ক্ষত নিয়ে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসেছেন লায়লা বেগম। তার স্বামী হামিদ হোসেন ও চার সন্তানকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তাদের কোনো খোঁজ পাননি। পরে নিজের জীবন রক্ষায় সীমান্তে এক দালালের মাধ্যমে টেকনাফ এসে উঠেন। অন্যদিকে মঙ্গলবার সকালে পাঁচ সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে আসেন মংডু থানার কেয়ারিপ্রাং গ্রামের আনোয়ারা বেগম। ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা সহিংসতা শুরু হলে তার স্বামী দিনমজুর মোহাম্মদ রশিদকে ধরে নিয়ে হত্যা করে সেদেশের সেনারা। কয়েকদিন পর স্বামীসহ গ্রামের আরও ৫ জনের পরিধেয় গায়ের রক্তাক্ত জামা বাড়ির পাশে ফেলে দিয়ে যায় কে বা কারা। এ থেকে তিনি ধারণা করছেন, স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। এর সপ্তাহখানেক পর ছেলে আরাফাত হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় সেনারা। তারও কোনো খোঁজ নেই। তাদের বাড়িটিও জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। পরে গ্রামের চেয়ারম্যান (হুক্কাডু) তাদের খাবার দিয়ে সাহায্য করেন। এভাবে বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সকালে লম্বাবিল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে লেদা ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। লেদা ক্যাম্পে ইব্রাহিমের বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছেন।

স্বামী-সন্তানকে হারিয়ে দীঘর্ পথ হেঁটে অসুস্থ ও আহত ৫ মাসের সন্তানসহ নৌকায় সীমান্ত হয়ে শুক্রবার লেদা ক্যাম্পে এসেছেন নুর বেগম (২৩)। ভিবীষিকাময় জীবন থেকে একটু স্বস্তি পেলেও শীত ও অসুস্থতার কাছে হার মেনে তার সন্তানটিকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি নুর বেগম। এর চেয়ে বেদনাদায়ক আর কী হতে পারে। গুলিতে স্বামী মরেছে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে দুই শিশুসন্তানকে আগুনে নিক্ষেপ করেছে জান্তারা। সর্বস্ব হারিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পার হওয়ার সময় নৌকার মাঝি ভাড়া হিসেবে স্বর্ণের নাকের ফুলটি নিয়ে নেয়। তার সঙ্গে আসা আমেনা বেগমও একই কায়দায় নদী পার হয়েছেন। বাকিরা দিয়েছেন টাকা ও অন্যান্য সরঞ্জাম।

এদিকে, উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে দ্বিগুণ উদ্বাস্তু। তাদেরই একজন পঞ্চাষোর্ধ্ব মোস্তফা খাতুন জানান, তিনি মংডুর খেয়ারীপাড়ার বাসিন্দা। মিয়ানামরের সেনা বাহিনীর বর্বর নির্যাতন সইতে না পেরে দু’দিন আগে বাংলাদেশে আসেন। তার সঙ্গে এসেছে আরও অন্তত ১২ জন। এরা কুতুপালং অনিবন্ধিত ক্যাম্পের ই-ব্লকে আশ্রয় নেয়। তিনি জানান, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী তার জামাতা জাহেদ হোছেনকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে। তাদের ঘরবাড়ি জালিয়ে দিয়েছে। লুট করেছে গবাদিপশু।

খদিজা বেগম নামে মিয়ানমার থেকে আসা আরেক মহিলা জানান, পরিবারের ৪ জন পালিয়ে আসে। পরিবারের আরও ৩ সদস্য মিয়ানমারে রয়ে গেছে। এদের কি অবস্থা তার জানা নেই।

তাদের মতো একইভাবে রাজিয়া খাতুন (৫৫), ফাতেমা খাতুন (৩৩), ছেনুয়ারা (১৪), কুলসুমা বেগম (৩৩) ছেলে- মেয়েসহ মিয়ানমারে অত্যাচার সইতে না পেরে দেশ ছেড়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তারা জানায়, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এখনও নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে হত্যা করছে। ঘরবাড়ি জালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। যুবতী মেয়েদের ধরে নিয়ে ধর্ষণ করছে। এমন ঘটনাও ঘটছে, লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে তাদের ওপর চলছে যৌন নির্যাতন।

নাগপুরা থেকে পালিয়ে আসা আবদুল গফুর (৪০) জানান, গত ২ দিন ধরে মগসেনারা সীমান্তের ঢেকিবনিয়া, কুমিরখালী, শিলখালী, বলিবাজার ও নাগপুরাসহ ৫টি গ্রামে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুড়িয়ে দিয়েছে ধানের খামার। এ সময় মগসেনারা বাড়িতে ঢুকে যুবক ছেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে আর যুবতী মেয়েদের ধর্ষণ করছে।

এদিকে স্থানীয়রা জানায়, ক্যাম্পগুলোতে হঠাৎ লোকজন বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যপণ্য ও চিকিৎসাসেবা নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আগের আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ওপর। তাদের জীবনযাত্রা কঠিন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে।

উখিয়া কুতুপালং ও লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬৭৬২ পরিবারে মোট ৩৫,৫৬৫ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছে। নিবন্ধিত রয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার রোহিঙ্গা। তাছাড়া হিসাবের বাইরে রয়েছে আরও অন্তত ২ লাখ রোহিঙ্গা। কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তির সভাপতি আবু ছিদ্দিক বলেন, ওপারে হত্যা আর ধর্ষণের ভয়ে এপারে আসতে গিয়ে অনেকে শেষ সম্বলও খুইয়েছেন। যারা ক্যাম্পে অবস্থান নিতে পেরেছে তারাও খাবার এবং শীতের তাড়নায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। উভয় সংকটে রয়েছে নির্যাতিত এসব রোহিঙ্গা।

৬ নৌকাসহ দেড় শতাধিক রোহিঙ্গা ফেরত : এদিকে কক্সবাজারের মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ৬ নৌকাসহ দেড় শতাধিক রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত সময়ে এসব রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করা হয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের সহায়তার দায়ে টেকনাফের মোহাম্মদ আমিন (৩০), মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৩২), মোহাম্মদ সেলিম (২০) ও উসমান (১৬) নামের ৪ দালালকে আটক করে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। কক্সবাজার ৩৪ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, নাফ নদী পার হয়ে অনুপ্রবেশকালে পালংখালী বিওপি এবং রেজুখাল যৌথ চেকপোস্টে দায়িত্বরতরা ৭৩ রোহিঙ্গাকে আটকের পর আবারও ফেরত পাঠিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত সময়ে পালংখালী ও রেজু খাল বিওপি যৌথ চেকপোস্ট এসব রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ প্রতিহত করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ২৪ জন নারী ও ৩৩ জন শিশু ছিল। তিনি আরও জানান, ১ নভেম্বর ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ৪৯৩ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিহত করা হয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবির তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

অপরদিকে টেকনাফ উপজেলার চারটি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই ৬টি নৌকা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে প্রতিহত করেছে বিজিবির সদস্যরা। টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল ছিদ্দীকি বলেন, মঙ্গলবার ভোরে নাফ নদীর ৪টি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে রোহিঙ্গা বোঝাই ৬টি রোহিঙ্গা নৌকাকে প্রতিহত করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই