অনুভূতির যে আধুনিক প্রকাশগুলো অনেক বেশি প্রাচীন

কষ্ট পাওয়া, আনন্দিত হওয়া, ভালোবাসা, অবাক হওয়া- মানুষের অনুভূতি সবসময়েই এরকম কিছু আবেগকে ঘিরেই কাজ করেছে। আর এই আবেগকে প্রকাশ করার কিছু মাধ্যমও আবিষ্কার করেছে মানুষ সেই প্রাচীন কাল থেকে। এই মাধ্যমগুলোর ভেতরে অন্যতম একটি হল আমাদের ব্যবহৃত নানারকম মৌখিক শব্দ ও কথা। এই যেমন- OMG (ওহ মাই গডের সংক্ষিপ্ত রূপ) কিংবা OK। কী? ভাবছেন, এগুলোর প্রচলন শুরু হয়েছে আধুনিক মানুষদের হাত ধরে? একদম না! বরং বলতে গেলে OK বা OMG বাদেও বর্তমানে অত্যাধিক ব্যবহৃত বেশকিছু শব্দ মানুষের অনুভূতির প্রকাশে সাহায্য করে এসেছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। চলুন তাহলে জেনে নিই শব্দগুলোকে।

১. ওকে

ওকে বা ঠিক আছে শব্দটা ঠিক কতদিন আগে প্রচলিত হয়েছে সেটা সঠিক বলা যায়না। তবে মনে করা হয়, ১৮৩৯ সালে সম্পাদকীয় ঠাট্টা হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয় ওকে শব্দটি। সেসময় প্রবন্ধকে আরো বেশি আকর্ষণীয় ও ভারী মেজাজের করে তুলতে শব্দের ছোট আকৃতি ব্যবহার করা হত। আর এক্ষেত্রে ওকে বা o.k. শব্দটির পূর্ণরূপ ছিল- Oll Korrect। সেসময় ওডব্লিউ (অল রাইট), এসপি (স্মল পটেটোস) সহ আরো এমন অনেক সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহৃত হত। কিন্তু দিনশেষে আর সবগুলো হারিয়ে গেলেও মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে ওকে। অবশ্য শব্দটির এই টিকে যাওয়ার পেছনে হাত ছিল তখনকার বিখ্যাত ওকে ক্লাবেরও। যার নামকরণ হয়েছিল ওল্ড কিন্ডারহুকের নামানুসারে।

২. ওএমজি

ওএমজি শব্দটির ব্যবহার খুব আধুনিককালের বলে মনে করা হলেও এর শুরুটা হয়েছিল ১৯১৭ সালে। সেসময় উইন্সটন চার্চিলকে লেখা এক চিঠিতে এ্যাডমিরাল জন আরবাথনট ফিসার এই শব্দটি ব্যবহার করেন। চিঠিতে বেশকিছু অভিযোগ করেন তিনি চার্চিলকে। সেইসাথে একটি কৌতুকও শোনান। আর সেই কৌতুকের শেষেই এই শব্দটি লেখেন ফিশার। মজার বিষয় হল সেসময় ফিশারের বয়স ছিল ৭৬ বছর।

৩. লোল

এলওএল বা লোলের অনেক রকম ব্যবহার আজকাল হয়ে থাকলেও এর মূল অর্থটা যে লাফিং আউট লাউড সেটা আমাদের প্রায় সবারই জানা। আর সেই সাথে এটাও আমরা কম-বেশী সবাই জানি যে, এই শব্দটির ব্যবহার প্রথম করা হয়েছিল ১৯৮০ সালে। বাস্তবে শব্দটির জন্ম কিন্তু হয়েছিল ১৯৬০ সালে। সেসময়কার ডাক্তারেরা লিটল ওল্ড রেডি নামক একটি নেতিবাচক অর্থ সম্বলিত ব্যাপার হিসেবে লোলকে ব্যবহার করতেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৭০এর দশকে নাসা লোল শব্দটি ব্যবহার করে তাদের কাজে। সেসময় এ্যাপোলো মিশন কম্পিউটারগুলো লোল মেমোরি ব্যবহার করতো।

৪. ফ্রিল্যান্স

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার শব্দটি ব্যবহৃত হয় স্বাধীনভাবে কাজ করছে এমন কর্মীকে বোঝাতে। তবে ১৬ থেকে ১৭ শতাব্দীর দিকে কিন্তু এই শব্দটির এই অর্থ ছিলনা। তখনও ব্যবহৃত হত ফ্রিল্যান্সার শব্দটি। মধ্যযুগে নাইটরা যুদ্ধের ময়দানে নিজেদের সাথে বল্লম নিয়ে যেত। ১৮১৯ সালে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই ফ্রির্যান্স শব্দটিকে বেশ পরিচিত করে তোলেন স্যার ওয়াল্টার স্কট।



মন্তব্য চালু নেই