অন্ধ প্রেমের নির্মমতা, শেষ হয়ে গেল একটি জীবন

অন্ধ প্রেমের নির্মমতা। তাও নিজের ওপর। একের পর এক ধারালো ব্লেডের পোঁচ। অসংখ্যবার কাটাকুটি। নিজেকে বার বার করেছে রক্তাক্ত। তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করে নিজের শরীরে খোদাই করেছেন প্রেমিকার নাম। ‘সাহেনাজ’। ছোটখাটভাবে নয়। বড় হরফে। পুরো বুক জুড়ে। কিন্তু এমন অন্ধ প্রেমের বিয়েতে বাদ সাধে নিজ পরিবার। বিয়েতে তাদের রাজি করানো যায়নি। সেই দুঃখে বেছে নিলো আত্মহত্যার পথ।

গত বুধবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন বনশ্রীর মেরাদিয়ায় বিষপান করে সে। এরপর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাত ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। ভর্তির এক ঘণ্টা পর তার মৃত্যু হয়। নিহত আল আমিনের পিতা শাহ আলম বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে সাহেনাজ নামে প্রতিবেশী এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৫শে নভেম্বর মেয়েটির মা আনোয়ারা বেগম আমাদের গ্রামের বাড়ি গিয়ে তাদের দু’জনের বিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। কিন্তু তারা তো ভিটেবাড়ি হীন। তাদের মেয়েকে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেব নাকি। তাছাড়া, আল আমিনের বড় দু’ভাইও বিয়ে করেনি। তাই তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ১৮ বছরের নিচে ছেলেকে বিয়ে দিয়ে আমি জেলে যাবো নাকি।

জানা যায়, নিহত আল আমিনের বাড়ি কুমিল্লার বাঙ্গোরা থানা সদরে। তার পিতা শাহ আলম ওই থানা সদরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পেশায় ঠিকাদার। তার ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে আল আমিন তৃতীয়। একই এলাকার বাসিন্দা নিজামত খানের মেয়ে সাহেনাজ। সে ঢাকায় তার বোনের বাসায় থাকে। গত রমজানে সে গ্রামের বাড়িতে যায়। তখন আল আমিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক মাসে বাড়ে তাদের ঘনিষ্ঠতা। পরে রমজানের এক সপ্তাহ পর সাহেনাজের মাও ঢাকায় চলে আসেন।

আল আমিনও ঢাকায় থাকে। রাজধানীতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এদিকে মেয়ের পরিবারও প্রথম দিকে তাদের প্রেমে বাধা দেন। ছেলে ও মেয়ে দুজনকে শাসান। আল আমিনের বড় ভাইয়েরাও তাদের আগে ছোট ভাইকে বিয়ে না করার জন্য অনুরোধ জানান। গত ২৫শে নভেম্বর মেয়ের মা তাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে নিজ গ্রামে ছেলের বাড়িতে যান। কিন্তু তাদের চেয়ে আল আমিনের পরিবার আর্থিক অবস্থা ও সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন হওয়ায় তার ওই প্রস্তাব মেনে নেয়নি তার পরিবার।

এরপর থেকেই আল আমিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এক পর্যায়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। নিহত আল আমিনের চাচা আবদুল গাফফার বলেন, আমি মিরপুরে থাকি। বুধবার রাতে বনশ্রীতে আল আমিন বিষপান করার খবর পাই। সে সাহেনাজ নামে একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে। এর পরিণতিতেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। এমজমিন



মন্তব্য চালু নেই