অবিশ্বাস্য এই ছেলেটির বয়স কত? জানলে ‘কোই মিল গয়া’-র কথা মনে পড়বেই

সমবয়সি বন্ধুরা রিপনের সঙ্গে খুব একটা মেশে না। তাই তার খেলা, গল্প আড্ডা সবই পাড়ার ক্লাস ফাইভ, সিক্সে পড়া বন্ধুদের সঙ্গে।

‘কোই মিল গয়া’ ছবিতে রোহিতের চরিত্রে হৃতিক রোশনকে মনে আছে? শারীরিকভাবে বড় হলেও মানসিক দিক দিয়ে অপরিণতই ছিল রোহিত। বর্ধমান রাজ কলেজের এই ছাত্রের বয়স ১৯ বছর। বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র শেখ রিপনকে দেখলে ‘কোই মিল গয়া’-র রোহিতকে মনে পড়তে বাধ্য। তফাত একটাই, পর্দার রোহিত মানসিকভাবে অপরিণত ছিলেন আর বর্ধমানের রিপন শারীরিকভাবে অপরিণত।

বর্ধমানের নবগ্রামের বাসিন্দা শেখ রিপনকে দেখলে যে কেউ বলবে তাঁর বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। কিন্তু ১৯ বছর বয়সি এই তরুণ বর্ধমান রাজ কলেজে প্রথম বর্ষে ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন। তাঁর চেহারা দেখলে অনেকেই তা বিশ্বাস করবেন না। কারণ তাঁর শারীরিক গঠনটাই অদ্ভুত ধরনের। গলার স্বর থেকে শুরু করে শারীরিক গঠন, সবই একেবারে বাচ্চা ছেলেদের মতো। কারণ ৮ বছর বয়সেই তাঁর শারীরিক বৃদ্ধি থেমে গিয়েছিল।

image (2)

বয়সে অনেক ছোট হলেও ওরাই রিপনের বন্ধু।

সমবয়সি বন্ধুরা রিপনের সঙ্গে খুব একটা মেশে না। তাই তার খেলা, গল্প আড্ডা সবই পাড়ার ক্লাস ফাইভ, সিক্সে পড়া বন্ধুদের সঙ্গে। নবগ্রামের শেখ রিপনকে নিয়ে তাই দুশ্চিন্তা কম নয় পরিবারের। তাঁর এই অপরিণত চেহারা নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ করে। তাতে কী? পড়াশোনায় আর পাঁচ জনকে টপকে স্কুলের সেরা ছিল রিপন। পড়াশোনা ছাড়াও আবৃত্তি, নাটক, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকবার রাজ্যস্তর থেকেও পুরস্কার জিতেছে রিপন। বরাবরের মেধাবী ছাত্র রিপন এবারের উচ্চমাধ্যমিকে ৮৫% নম্বর নিয়ে পাশ করে। এখন বর্ধমান রাজ কলেজে ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়ছে রিপন।

image (3)

বাবা এবং শিক্ষকের সঙ্গে শেখ রিপন।

রিপনের বাবা শেখ মোস্তাফা পেশায় রাজমিস্ত্রি। অভাবের সংসার তাই ছেলের সুচিকিৎসা করাতে পারেনি। স্থানীয় চিকিৎসক জানিয়েছেন, হরমোন জনিত কারণেই এসমস্যা। ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে দাবি করেছেন শেখ মোস্তফা। কিন্তু তার জন্য খরচ অনেক। সামান্য রাজমিস্ত্রির কাজ
করে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই ইচ্ছা থাকলেও ছেলের চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ বাবা। ভিন দেশের বাসিন্দা জাদু এসে ‘কোই মিল গয়া’-র রোহিতকে বড় করে দিয়েছিল। বাস্তবের রিপনও সেরকমই কোনও জাদুকে প্রয়োজন।



মন্তব্য চালু নেই