অভাব ইমনকে আটকাতে পারেনি, পেয়েছে জিপিএ-৫

এসএম হাবিব, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : শত অভাব আর কষ্টের মধ্যেও বায়োজিদ হাসান ইমন এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সহায় সম্পত্তি বলতে মাত্র ৫ শতক জমির উপর একটি বেড়ার ছোট ঘর। সংসারে আয়ের একমাত্র উৎস মা। ঘরের সঙ্গে ছোট্ট টং দোকানে মুদি ব্যবসা। নিত্য অভাবের সঙ্গে মা আর ছেলের বসবাস।

বায়োজিদ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাচড়া গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে। সে ঈশ্বরবা দাখিল মাদরাসার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। একই মাদরাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৮১ পেয়েছিল। শিক্ষক আর মায়ের কষ্টার্জিত টাকায় চলেছে তার লেখাপড়া। লেখাপড়ার খরচ যোগাতে মা-ছেলের প্রায়ই অর্ধাহারে দিন কেটেছে। এখন ছেলের উচ্চ শিক্ষার খরচ কিভাবে যোগাবে তা নিয়ে চিন্তিত মা। তাই বর্তমানে মায়ের কাছে ছেলের ফলাফলের আনন্দ এখন হতাশার সাথে চরম বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইমনের মা মনজুয়ারা বলেন, বায়োজিদের বয়স যখন ১১ মাস তখন ওর বাবা আত্মহত্যা করে। অভাবের সংসারে ক্ষোভ আর কষ্টে তিনি গলাই ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। বায়োজিদের বাবা মরে বাঁচলেও আমি হাল ছাড়িনি। বেঁচে থাকার তাগিদে শুরু করি জীবন সংগ্রাম। প্রতিজ্ঞা করি কোলের সন্তানকে মানুষ করতেই হবে। সেই থেকে বাড়িতে সামান্য মুদি ব্যবসা করেই কেটেছে জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত। শত অভাবের মধ্যেও ছেলের লেখাপড়ায় সাহস যুগিয়েছি।

বায়োজিদ হাসান ইমন জানায়, আমার মা লেখাপড়ার জন্য সব সময় সাহস যুগিয়েছেন। কিভাবে দারিদ্রতাকে জয় করে এগিয়ে যেতে হয় সে উৎসাহ দিয়েছেন। সে ডাক্তার হতে চায় বলে জানায়।

ঈশ্বরবা দাখিল মাদরাসার সুপার মোহাম্মদ জামাত আলী লস্কর জানান, বায়োজিদ খুব ভদ্র ও মেধাবী। সে নিয়মিত মাদরাসায় উপস্থিত থাকতো। অভাবের কারণে মাদরাসা থেকে তার কোন খরচ নেয়া হতো না। তিনি আরো জানান, ওর উচ্চশিক্ষার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।



মন্তব্য চালু নেই