অলৌকিক পাথর নিয়ে তোলপাড়

চাঁদপুর জেলার পীরের মাজারে কুড়িয়ে পাওয়া একটি পাথরের মালিকানা নিয়ে দুই পরিবারের বিরোধ নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

জেলার হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার দুই পরিবারের মধ্যে এনিয়ে বহু সালিশ দরবার হলেও শেষ পর্যন্ত এর সমাধান না হওয়ায় এর রহস্য ও মালিকানার সমাধানের দায়িত্ব পড়েছে পুলিশের কাঁধে। দায়িত্ব পেয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে ডিম্বাকৃতির সেই পাথর নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশের এসআই জুয়েল।

প্রায় ৪ মাস আগে জেলার হাজীগঞ্জের উপজেলার অলিপুর গ্রামের স্বপন-রাবেয়া দম্পতির মেয়ে পান্না আক্তার স্থানীয় এক পীরের মাজারের পাশে প্রায় ১৫০ গ্রাম ওজনের সাদা রঙের ডিম্বাকৃতির পাথরটি খুঁজে পায়। কুড়িয়ে পাওয়া পাথরটি একটি অলৌকিক পাথর মনে করে তার মা-বাবা এটি তাদের বসতঘরে সংরক্ষণ করে রাখেন। তারা এর মধ্যে পাথরের কিছু অলৌকিক ক্ষমতাও দেখতে পান বলে জানান। পাথরটি যেদিন কুড়িয়ে পায় পান্না সেইদিন তার ফুফাতো বোন তানিয়া আক্তার সেখানে ছিল। এরই মধ্যে তাদের ঘর থেকে পাথরটি চুরি হয়ে যায়। দায়ী করা হয় পান্নার ফুফাতো বোন তানিয়াকে।

তাদের অভিযোগ, তানিয়া বেড়াতে এসে মহামূল্যমান পাথরটি চুরি করে তার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে নিয়ে গেছে। বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য কয়েক মাস ধরে এলাকায় অনেকবার সালিশ দরবার হলেও তানিয়া পাথরটি নিজের দাবি করে তা দিতে অস্বীকার করে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী আক্কাস জানান, এ বিষয়ে তিনি  দুই পরিবারের মধ্যে একটা সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হবার পর তাদের পরামর্শ দিয়েছি পুলিশকে জানানোর জন্য। পরে গত ৩ নভেম্বর পান্নার মা রাবেয়া আক্তার বাদী হয়ে তানিয়ার মা-বাবাসহ পাঁচজনকে আসামি করে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই জুয়েল চৌধুরী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রায় তিনঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তানিয়ার কাছ থেকে আলোচিত সেই পাথরটি উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা জুয়েল চৌধুরী জানান, পাথরটি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে দেখা হয়েছে। এটি একটি সাধারণ পাথর ছাড়া আর কিছুই নয়। আদৌ এর কোনো অলৌকিক ক্ষমতা আছে কি না এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। পাথরটি ফরিদগঞ্জ থানার হেফাজতে রয়েছে।

এলাকার একটি কুচক্রি মহল পাথরটিকে মহামূল্যবান বানিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, ‘সাদা রঙের ডিম্বাকৃতির প্রায় ১৫০ গ্রাম ওজনের একটি পাথর নিয়ে তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। একজন উপ-পরিদর্শককে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই