অল্পের জন্য শত শত প্রাণ রক্ষা!

রেলস্টেশনের ১ নম্বর রেললাইনে এসে যাত্রীবাহী ট্রেনটি দাঁড়িয়েছিল। প্রায় আধা ঘণ্টা ট্রেনটি ওই লাইনে থেমেছিল। হঠাৎ করে ওই একই লাইনে ঢুকে পড়ে তেলবাহী একটি ট্রেন (থ্রো-পাস)।

নিশ্চিত দুর্ঘটনা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ট্রেনের কয়েকশ’ যাত্রীসহ স্টেশনে উপস্থিত লোকজন। ভয়ে সবাই চিৎকার শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে গেটকিপার লাল পতাকা হাতে নিয়ে দৌড়ে গিয়ে রেললাইনে দাঁড়ান।

যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে তেলবাহী ট্রেনটি লাল পতাকা দেখে চালক থামাতে সক্ষম হন। অল্পের জন্য রক্ষা পায় শত শত ট্রেনযাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রংপুরের বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে।

রেল স্টেশন কার্যালয় ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্টেশনের একই রেললাইনে দুটি ট্রেন উঠে পড়ায় নিশ্চিত দুর্ঘটনা ভেবে চিৎকার করছিল যাত্রীরা। ওই দিন কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী রমনা ৪২১ নম্বর ট্রেনটি রাত ৯টার দিকে বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর লাইনে এসে থামে।

পরের স্টেশনের অনুমতি (ক্লিয়ারেন্স) না পাওয়ায় সেখানেই ট্রেনটি দাঁড়িয়েছিল। প্রায় আধা ঘণ্টা পর স্টেশনের একই রেললাইনে তেলবাহী একটি ট্রেন সরাসরি ঢুকে পড়ে। এ অবস্থায় আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের যাত্রী ও স্টেশন চত্বরে উপস্থিত সাধারণ লোকজন দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করে।

এ সময় স্টেশনের গেটকিপার মোকছেদুল ইসলাম লাল পতাকা হাতে দৌড়ে রেললাইনের ওপরে দাঁড়িয়ে তেলবাহী ট্রেনের চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। চালক শেখ আবুল হোসেন গেটকিপারের লাল পতাকা দেখে দ্রুত ট্রেনটিকে থামাতে সক্ষম হন।

এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায় কয়েকশ’ যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দুই ট্রেনের মধ্যে দূরত্ব ছিল মাত্র ৫০ থেকে ৬০ গজ। তবে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ট্রেন থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন যাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীবাহী রমনা ট্রেনটি ওই স্টেশনে ঢোকার আগে আউটার সিগন্যাল ডাউন দেয়া হলেও পরে সেই সিগন্যাল আর ওঠানো হয়নি। এ কারণে আধা ঘণ্টা পর ওই তেলবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল ডাউন দেখে সরাসরি স্টেশনের একই লাইনে ঢুকে পড়ে।

গেটকিপার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ একই রেললাইনে আরেকটি ট্রেন ঢুকে পড়ার পর মানুষের চিৎকার শুনে দ্রুত লাল পতাকা নিয়ে লাইনের ওপরে দাঁড়িয়ে ট্রেনটি থামাই। তা না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত।

কর্তব্যরত মাস্টার সফিউর রহমান বলেন, যাত্রীবাহী ট্রেনটি ঢোকার পর দায়িত্বে থাকা লোকজন আউটার সিগন্যাল ওপরে তুলে দেয়। কিন্তু সিগন্যালের সঙ্গে পেঁচিয়ে থাকা তার হয়তো সিগন্যাল ওপরে ওঠানোর ক্ষেত্রে ঠিকভাবে কাজ করেনি। স্টেশনের বাঁকা লাইনের কারণেও তা দেখা যায়নি। এ কারণেই মূলত সমস্যা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই