অসম্ভবকে সম্ভব করাই মাশরাফির কাজ

‘অসম্ভবকে সম্ভব করাই মাশরাফির কাজ’ এবারের বিপিএল শুরুর আগে কুমিল্লা দলের জার্সি উন্মোচনের দিন দলটির ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর চলচ্চিত্র পরিচালক ও নায়ক অনন্ত জলিল মাশরাফির মুখ থেকে বলা নিয়েছিলেন। মাশরাফির মুখে উচ্চারিত সেই বাক্যটি কাল যেন বাস্তবা রূপ লাভ করলো।

গতকাল বিপিএলে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি মাঠে নেমে হতে চেয়েছিলেন মারলন স্যামুয়েলসের সহযোগী। কিন্তু চিত্রনাট্য পাল্টে হয়ে গেলেন নায়ক। মঙ্গলবার বিপিএলে ব্যাট হাতে অসাধারণ এক ইনিংস খেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৭ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন তিনি।

নড়াইল এক্সপ্রেস; মাশরাফির মূল পরিচয়টা আসলে দুরন্ত পেস বোলার হিসেবে। তবে দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠতে পারেন; খেলতে পারেন ঝড়ো ইনিংস। মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তেমনটাই করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সীমিত ফরম্যাটের অধিনায়ক। ব্যাট হাতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ম্যাচ উইনার হিসেবে।

চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে মাত্র ৩২ বলে হার না মানা ৫৬ রান করে অধিনায়ক হিসেবে দলকে এনে দিয়েছেন পরম কাঙ্ক্ষিত এক জয়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে হার দিয়ে যাত্রা শুরু কুমিল্লার। দ্বিতীয় ম্যাচে জয়টা তাই বেশ গুরুত্বপূর্ণই ছিল।

চিটাগাংয়ের বিপক্ষে সেই কাঙ্ক্ষিত জয় পেতে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ১৭৭ রান। মাত্র ২০ ওভারে (টোয়েন্টি২০ ক্রিকেট) বড়সড় এমন টার্গেট তাড়া করার গোড়াপত্তন করতে গিয়ে হতাশই করেছেন দলের দুই ওপেনার। মোহাম্মদ আমিরের পর পর দুই ওভারে ইমরুল কায়েস ও লিটন কুমার দাস ফিরেছেন সাজঘরে। লিটন ৯ রান করলেও ইমরুল রানের খাতাই খুলতে পারেননি।

তাই পরবর্তী দায়িত্বটা পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা মারলন স্যামুয়েলস ও শুভাগত হোমের ওপর। শুভাগত ১৬ বলে থেকে ৩০ রান করে দায়িত্বটা ঠিকমতো পালনের দিকেই এগোচ্ছিলেন। তবে পেসার শফিউলের বলে তিলকরত্নে দিলশান দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরে বিদায় করেন শুভাগতকে।

এর পর স্যামুয়েলসের সঙ্গী হিসেবে মাঠে আগমন মাশরাফির; দলের ব্যাটিংঅর্ডার পরিবর্তন করে। মাঠে নেমে ৩২ বলে ৫৬ রানের জয়সূচক ইনিংসটি মাশরাফি সাজিয়েছেন ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়। ম্যাচ শেষে এটিকেই নিজের সেরা ইনিংস বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে স্মরণ করেছেন শাহাদাত হোসেন রাজিবের সঙ্গে এক টেস্ট ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ফলোঅন এড়ানো নিজের একটি ইনিংসের কথাও। ব্যক্তিগত ইনিংস নিয়ে মাশরাফি বলেছেন, ‘আমি ফিনিশিংয়ের কথা কখনো ভাবিনি।

এর আগে ক্লাব পর্যায়ে হাফসেঞ্চুরি করলেও এমনটা হয়নি। আজকেও ভাবিনি। কারণ, আমি সাধারণত শেষদিকে আউট হয়ে যাই। যেহেতু আমাদের ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, তাই স্যামুয়েলসকে সহায়তা করতে আগেই নেমেছিলাম।

টার্গেট ছিল আমি নামলে যাতে ওদের বোলিং পরিকল্পনাটা একটু ওলট-পালট হয়ে যায়। হয়তো তখন আমিরকে দিয়ে বল করাবে। তাহলে শেষদিকে স্পিনাররা এলে রান তোলা সম্ভব হবে।’



মন্তব্য চালু নেই