অস্ট্রেলিয়ার এমন লজ্জা ১১৯ বছরে এই প্রথম!

এখনো অ্যাশেজে চোখ না রাখলে শিগগিরই টিভি খুলে বসুন। ট্রেন্টব্রিজে যে অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে চলেছে! ওভারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার উইকেট। ১৩ ওভারের মধ্যেই তারা হারিয়ে ফেলেছিল ৯ ব্যাটসম্যান! শেষ পর্যন্ত ৬০ রানে অলআউট।
এর চেয়ে কম রানে মাত্র ছয়বার অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১১ সালেই একবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে ৪৭ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। কিন্তু এর আগের ঘটনাটি ১৯৩৬ সালের। গত ৭৮ বছরে এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয় ৬০ কিংবা এর কমে অলআউট হলো অস্ট্রেলিয়া। সেটিও ম্যাচের প্রথম দিনের লাঞ্চের আগেই। প্রথম দিনে লাঞ্চের আগে অলআউট হওয়ার লজ্জা একবারই হয়েছিল তাদের, সেটিও ১৮৯৬ সালের জুনে। অর্থাৎ​ গত ১১৯ বছরে এমন লজ্জায় কখনোই পড়েনি অস্ট্রেলিয়া!
প্রায় একাই অস্ট্রেলিয়াকে ধসিয়ে দিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। ১৫ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন ৮ উইকেট। ১৯৯৪ সালের পর এই প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট পেলেন কোনো ইংলিশ বোলার। এর মধ্যে প্রথম পাঁচ উইকেট নিতে তাঁকে খরচ করতে হয়েছে মাত্র ১৯ বল। টেস্টে দ্রুততম ৫ উইকেট তুলে নেওয়ার বিশ্ব রেকর্ড। বাকি দুটো উইকেট মার্ক উড ও স্টিভেন ফিনের। উড আর ফিনের হয়তো আফসোসই হচ্ছে। খামোখা উইকেট দুটো নিতে গেলাম। না হলে ইনিংসে ১০ উইকেট পাওয়ার তৃতীয় ঘটনাই তো ঘটে যেত!
লাঞ্চের আগে বলা হলো বটে, কিন্তু অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে গেছে ১৮.৩ বলে। বলের হিসাবে সপ্তম দ্রুততম সময়ে অলআউট হওয়ার ঘটনা এটি। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ইনিংসে এত দ্রুততম সময়ে কেউই অলআউট হয়নি। ১৮৯৬ সালে অলআউট হওয়ার সেই ইনিংসটাতেও অস্ট্রেলিয়া খেলেছিল ১১৩ বল, আজ খেলল মাত্র ১১১টি!
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ওভারেই জোড়া ধাক্কা দিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। অ্যান্ডারসন-শূন্যতা পূরণ করতে প্রস্তুত বলে এই টেস্টের আগে প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছিলেন। চোটের কারণে গত টেস্টের অন্যতম নায়ককে হারিয়ে ফেলার শূন্যতা তাই বলে ব্রড প্রথম ওভারেই পূরণ করবেন! নিজের দ্বিতীয়, তৃতীয় আর চতুর্থ ওভারে আরও তিনটি উইকেট তুলে নেন ব্রড। পঞ্চম উইকেটটি এসেছে চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে। ১৯ বলে ৫ উইকেট তুলে নেওয়ার আগের রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার আর্নি টোশাকের।
এর মধ্যে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মার্ক উডও নেন এক উইকেট। ৬.১ ওভারে, আরও স্পষ্ট করে বললে ৩৭ বলে ৬ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এর পর আক্রমণে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফিন তুলে নেন আরও এক উইকেট। ৩৪ রানে ৭ উইকেট—১০ ওভারেই ইনিংসের ভাগ্য নির্ধারিত। একই সঙ্গে সম্ভবত ম্যাচ আর এবারের অ্যাশেজেরও।
ইনিংসের ১৩ আর নিজের সপ্তম ওভারে আবারও ব্রডের জোড়া আঘাত। দশম ওভারে নটে গাছটিও মুড়িয়ে দিয়েছেন। ব্রডের বোলিং ফিগার বাঁধিয়ে রাখার মতো: ৯.৩-৫-১৫-৮!
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ রান মিচেল জনসনের ব্যাটে, ১৩। এই শুনে মিস্টার এক্সট্রা আপত্তি করতে পারেন অবশ্য। বলতে পারেন, ‘কেন, আমি যে ১৪ করলাম!’



মন্তব্য চালু নেই