অহেতুক ভীতি দূর করে সুস্থ থাকবেন কিভাবে দেখে নিন

২০ বছর ধরে লিফটে চড়েন না ব্যাংকার হাবিবউল্লা। ২০ বছর আগে এক অফিসে লিফটে চড়ার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। ১৫ মিনিটের জন্য ভেতরে আটকা পড়েন তিনি। এর পর থেকে লিফটের প্রতি প্রচণ্ড এক ভীতি জন্মায় তাঁর। তাঁর বিশ্বাস, লিফটে উঠলেই একসময় তা বন্ধ হয়ে যাবে এবং তিনি আর কখনোই বের হতে পারবেন না।

এরপর তিনি একবারই লিফটে চড়েছিলেন। তারপর হূৎপিণ্ডটা যেন লাফাতে শুরু করেছিল, দম বন্ধ হয়ে আসছিল, মনে হচ্ছিল মারা যাবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি পদোন্নতি প্রত্যাখ্যান করেছেন, কেননা তাহলে তাঁকে বসতে হবে ১০ তলায় এবং লিফট ব্যবহার করতে হবে।

ভয় যখন অস্বাভাবিক
নির্দিষ্ট বস্তু, বিষয় বা পরিস্থিতিতে একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ভয় গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এই ভয়ের অনুভূতি যদি স্বাভাবিকতার সীমা অতিক্রম করে তখন তা একটি রোগ। একে বলে ফোবিয়া বা ফোবিক ডিজঅর্ডার বা অহেতুক ভীতি রোগ। অনেকে বিভিন্ন প্রাণী যেমন—কুকুর, সাপ, টিকটিকি, তেলাপোকা, মাকড়সা ইত্যাদি অতিরিক্ত ভয় পান। কারও ভীতি বিভিন্ন প্রাকৃতিক অবস্থা যেমন—উচ্চতা, ঝড়, সমুদ্র, পাহাড় ইত্যাদিকে। কেউ আবার রক্ত, ক্ষত, ইনজেকশন—এসব দেখলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন ভয়ে।

বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যেমন— বিমানে চড়তে, লিফটে উঠতে, বদ্ধ স্থানে অনেকের ভীতি জন্মায়। কেউ একা থাকলে ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কেউ আবার অনেক জনসমাগমের মধ্যে ফোবিয়ায় আক্রান্ত হন, দম বন্ধ হয়ে আসে। আক্রান্ত ব্যক্তির এই অস্বাভাবিক পর্যায়ের ভয় তাঁর ব্যক্তিগত, সামাজিক ও কর্মজীবনে ব্যাঘাত ঘটায়। বিষয়টি সেই মানুষ এড়িয়ে চলেন যেকোনোভাবে।

ভয় পেলে যা হয়
আক্রান্ত ব্যক্তির কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন—হাত-পা কাঁপা, মুখ শুকিয়ে আসা, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট, দম বন্ধ ভাব, বুকের মাঝে চাপ, ব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম, ক্লান্তি, মাথা ঝিম ঝিম করা, মাথা ঘোরা, পেটের মধ্যে অস্বস্তি, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা বমি ইত্যাদি।

চিকিৎসা কী?
ফোবিয়া একধরনের মানসিক রোগ এবং এর মূল চিকিৎসা হলো সাইকোথেরাপি, বিশেষত বিহেভিয়ার থেরাপি। এই থেরাপিতে ব্যক্তির অনাকাঙ্ক্ষিত বা অস্বাভাবিক আচরণকে ধীরে ধীরে চর্চা ও কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে আকাঙ্ক্ষিত আচরণে পরিবর্তিত করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উদ্বেগের শারীরিক-মানসিক উপসর্গ কমাতে ওষুধ ব্যবহারেরও প্রয়োজন হতে পারে



মন্তব্য চালু নেই