“আইএস নেই বললেই তার তৎপরতা বন্ধ হয় না, বরং শক্তিশালী হয়”

সাম্প্রতিক গুলশান হত্যাকান্ডের ঘটনাকে ধারাবাহিক টার্গেট কিলিং-এর রোমহর্ষক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কমিটির অন্যতম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু বলেছেন, বাংলাদেশে গুলশান হামলা প্রমাণ করলো যে, জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করলে নিরপত্তা সংকট কমে না, বরং বাড়ে। আইএস নেই বললেই তার তৎপরতা বন্ধ হয় না, বরং আরো শক্তিশালী হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করে, তাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে জঙ্গিদের আক্রমণ বন্ধ করা যায় না। তিনি বলেন, পার¯পরিক দোষারোপের রাজনীতির কারণে প্রকৃত ঘাতকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে এবং এতে তারা উৎসাহিত হয়ে আরও নতুন নতুন হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। খুনি ও দাগি সন্ত্রাসীদের ধরার চেয়ে প্রতিটি ঘটনা থেকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের অপকৌশলের কারণে সন্ত্রাসীরা ক্রমে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ফলে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আজ গুরুতর হুমকির মুখে।

তিনি বলেন, এতদিন বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে ‘টার্গেট কিলিং’ মুক্তমনা, ব্লগার, প্রকাশক, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ, পুরোহিত, যাজক কিংবা সাধারণ মানুষজনকে হত্যা আর এবার দেখল জিম্মি করে ২০ জন দেশি বিদেশি নিরিহ মানুষকে হত্যা। ২০১১ সাল থেকে দেশে গলাকেটে হত্যার ঘটনা ঘটলেও সরকার এটাকে এতদিন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলে পাশ কাটিয়েছে। এমনকি তথাকথিত আইএস এবং জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার দায় স্বীকারকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

আবু হাসান টিপু বলেন, যেকোন হত্যাকান্ডের তদন্তের আগেই যখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ রাজনৈতিকভাবে দোষারোপ শুরু করেন তখন গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করার সুযোগ বিনষ্ট হয়ে যায়। দোষারোপের এই রাজনীতির কারণে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পেশাদারিত্বও মারাকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার এই দোষারোপের অপকৌশল পরিহার করে প্রতিটি হত্যাকান্ডের গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ তদন্ত, প্রকৃত ঘাতকদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান করেন তিনি। একই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণে রাজনৈতিক দল ও জনগণকে আস্থায় নিয়ে কার্যকরী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেয়ার জন্যেও তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার সকালে হাজিগঞ্জস্থ দলীয় কার্যালয়ে বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির আহবায়ক শ্রমিকনেতা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই শ্রমিক সভাতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নারী নেত্রী সালমা আক্তার সুমি, শ্রমিকনেতা পরিতোষ সরকার, তোফাজ্জল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, বাবুল মিয়া প্রমূখ।



মন্তব্য চালু নেই