আইনজীবীদের যা বললেন নিজামী

মানবতাবিরোধী অপরাধের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী তার আইনজীবীদের রিভিউ আবেদন করতে বলেছেন।

আজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে যান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান, মশিউল আলম ও মতিউর রহমান আকন্দসহ কয়েকজন আইনজীবী। পরে তারা বিকাল তিনটার দিকে বেরিয়ে আসেন।

নিজামীর আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তিনি জানান, নিজামী তাদেরকে রিভিউ আবেদন করতে বলেছেন। নিজামী নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেন আইনজীবীদের কাছে।

বিধি অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করবেন বলে জানান আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ।

এর আগে সকালে নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। এ সময় তিনি অনেকটা ‘স্বাভাবিক’ ছিলেন। তখনই নিজামী জানিয়েছিলেন, আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি রিভিউ আবেদন করবেন।

সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখার প্রায় আড়াই মাস পর গতকাল মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর সন্ধ্যায় তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারক রাত ৯টার দিকে আসামির মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন। লাল সালুতে মুড়ে এই মৃত্যু পরোয়ানা রাত সাড়ে ৯টার পর ট্রাইব্যুনাল থেকে পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখান থেকে পরোয়ানা আজ সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

নিয়ম অনুযায়ী রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। মৃত্যু পরোয়ানা হাতে পেলে আসামিকে তা পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতেই শুরু হবে সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি।

গত ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগ সংক্ষিপ্ত রায়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও পাবনার সাঁথিয়ায় হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে তিনটি অভিযোগে নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। নিজামীর আপিল আংশিক মঞ্জুর করে তিনটি অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ করতে পারবে আসামিপক্ষ। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে শুধু থাকবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়টি। রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করলে দণ্ড কার্যকর করবে সরকার।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ একাত্তরে আলবদর প্রধান ও জামায়াতের সহযোগী সংগঠন তৎকালীন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি নিজামীকে আটটি অভিযোগের মধ্যে চারটিতে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ ছাড়া চারটি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওই সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন নিজামী।

চট্টগ্রামে আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শিল্প ও কৃষিমন্ত্রী নিজামী বর্তমানে জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১০ সালের ২৯ জুন থেকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন।



মন্তব্য চালু নেই