আওয়ার নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর সেই নির্যাতিত গৃহবধু ফিরে পেল কোলের সন্তান

হামিদা আক্তার, নিজস্ব প্রতিবেদক : অবশেষে আওয়ার নিউজ বিডি ডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর স্বামী- শাশুড়ী-শ্বশুরের নির্যাতনের শিকার গৃহবধু পারভীন আক্তার ১ মাস বয়সী কোলের শিশুকে ফেরত দিলো তার শাশুড়ী। নির্যাতনর শিকার গৃহবধুঁ কোলের শিশুকে ফেরত পেতে চায় শিরোনামে সংবাদ প্রকাশে টনক নড়ে গৃহ্ধুর স্বামী-শাশুড়ীর।

জানা যায়, সংবাদটি প্রকাশের পর পরেই খালিমা চাপানী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ঐ গৃহবধুর শশুড়বাড়ীতে ফোন করে বলেন, মায়ের দুধ পান করা শিশুকে কোন ভাবেই আটকানো যাবে না। তাই যত তারাতারি পারো ডিমলা হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা গৃহবধু পারভীনের কাছে শিশুটি পৌছে দিতে হবে। পরে ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হোসেনকে সাথে নিয়ে গৃহবধুঁর শাশুড়ী ১ মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে পারভীনের হাতে তুলে দেয় রোববার দুপুর আনুমানিক দেড়টায়।

এ সময় শাশুড়ী নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর সাথে কোন কথা বলেননি বলে জানায় গৃহবধু পারভীন। এদিকে গৃহবধু পারভীন তার কোলের শিশু সন্তানকে ফেরত পেয়ে খুশি। তবে তিনি নিযাতনের বিচার চান বলেও জানিয়েছে সংবাদকর্মীদেরকে।

উল্লেখ্য, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধুঁ উপজেলা খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ডালিয়া সরকার পাড়া গ্রামের জামিয়ার রহমানের কন্যা পারভীন আক্তার (২২)। একই গ্রামের হামিদুল ইসলামের পুত্র আবু সামাদের সাথে পারিবারিক আলোচনায় আনুষ্ঠানিক ভাবে পারভীন-সামাদের বিয়ে সু-সম্পন্ন হয়। এ সময কন্যা দায়গ্রস্ত পিতা জামিয়ার রহমান জামাইকে উপঢৌকন হিসেবে প্রায় ২ লাখ টাকা নগদ প্রদান করেন। বিয়ের এক বছরের মাথায় পারভীন গর্ভে ধারন করে একটি শিশু। গর্ভে সন্তান আসার সাথে সাথেই স্বামী শাশুড়ী ও ভাশুড়ের অত্যাচার বেড়ে যায় আমার উপড় বলে জানায় গৃহবধু পারভীন।

কেন তারা নির্যাতন করতে থাকে উত্তরে পাশে থাকা তার মা বিউটি বেগম জানালেন, আমরা বিয়ের সময় ২ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা দিতে পারিনি। তবে জামাইকে বলেছিলাম এবারে ধান কেটে দিবো। কিন্তু তার অপেক্ষা না করেই আমার মেয়ের প্রতি নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। এই নির্যাতনের শিকার হয়েও শশুড় বাড়ী ছাড়তে রাজি হয়নি আমার মেয়ে। এত নির্মম নির্যাতনের মধ্যে দিয়েও শশুড় বাড়ীতেই পারভীনের গত ০১ মাস হলো জন্ম নেয় শিশু রিমন ( বয়স- ০১ মাস) । পারভীন-সামদের সংসারে আলো জ্বালিয়ে পৃথিবীতে আসে শিশুটি। তারপরও নির্যাতনের মাত্রা এতটুকু কমেনি পারভীনের উপড়। ঘটনার দিন গত ২৫ নভেম্বর দিনগত রাতে গৃহবধুর ভাশুড় মোঃ মশিয়ার রহমান ঐ টাকার জন্য তাকে এলাপাতারী মারধর করেন ফলে পারভীনের চোখে প্রচন্ড আঘাত লাগে।

ঘটনা বেগতিক দেখে স্থানীয় লোকজন নির্যাতনের শিকার গৃহবধু পারভীনকে উদ্ধার করে ডিমলা হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। কিন্তু ঘটনার সময় কোলের ০১ মাস বয়সী শিশু রিমনকে গৃহবধুঁর সাথে নিয়ে আসতে চাইলে শিশুটিকে কেড়ে নিয়ে স্বামী-শাশুড়ী বাড়ীতেই রেখে দেয়। হাসপাতালের ভর্তি হওয়ার প্রায় ৪৮ ঘন্টা পেড়িয়ে গেলেও কোলের শিশুকে ফিরে পায়নি গৃহবধু পারভীন।

এদিকে কোলের শিশুকে ফিরে না পেয়ে বুকের দুধ খাওংয়াতে না পেরে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে গৃহবধুঁ পারভীন। এ খবর প্রকাশের পরেই গৃহবধুঁ তার শিশুকে ফেরত পায়।

আরো পড়ুন : ১ মাসের শিশুকে কোলে ফিরে পেতে চায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধু



মন্তব্য চালু নেই