আকর্ষণীয়, অপ্রতিদ্বন্দী ব্যক্তিত্বের জন্য যা করবেন

আমরা সবসময়ই নিজেকে অন্যের কাছে এক বিশেষ ভাবমূর্তির সাথে প্রকাশ করতে চাই। আমরা চাই অন্যেরা আমাদের বুদ্ধিমান হিসেবে জানুক, আমাদের ব্যক্তিত্বে আকৃষ্ট হোক। সবার মাঝে আলাদা ভাবে গুরুত্ব পেতে পছন্দ করি আমরা সবাই। কিন্তু সবাই কি গুরুত্ব পায়? আসরে, আড্ডায় সবাই কি হতে পারে মধ্যমণি?

আপনি যদি সবার প্রিয় পাত্র হন সেক্ষেত্রেও কিন্তু সেই আকর্ষণ ধরে রাখার ব্যাপার থেকে যায়। নিজের একটি অপ্রতিদ্বন্দী ব্যক্তিত্ব তৈরি করা এবং তা ধরে রাখা উভয়ই একটি কঠিন কাজ। আপনার কাজে দেবে চমৎকার এই কৌশলগুলো-

নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখুন
ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে মানুষের নিজস্ব গুণে। আপনার চরিত্রের দৃঢ়তাই কিন্তু ফুটে ওঠে আপনার প্রকাশভঙ্গিতে। নিজের বদভ্যাসগুলো শুধরে ফেলুন। লক্ষ্য নির্দিষ্ট করুন। যা করবেন ভেবেছেন, করে ফেলুন। সেটা যত ছোটখাট বিষয়ই হোক না কেন। হয়ত আপনি জিমে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু জিমে প্রথমদিন গিয়েই আর গেলেন না। কোন কাজ করবেন বলে হাতে নিয়েছেন, কিন্তু শেষ না করে রেখে দিলেন। এসবই আমরা করি যখন আমাদের লক্ষ্যের কোন ঠিক থাকে না। উদ্দেশ্যহীনভাবে আমরা সময় ব্যয় করে যাই। তাই, আমাদের একটি লক্ষ্য ঠিক করতে হবে এবং কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই বুঝে নিতে হবে আমরা সেটি করতে পারব কিনা।

আপনার ব্যাপারে মতামত গড়ে তুলুন
আপনি যখন আত্মবিশ্বাসী এবং সৃষ্টিশীল তখন সহজেই সেটা আপনার চোখে মুখে ফুটে ওঠে। আপনার কন্ঠেও ফুটে ওঠে সাহস, দৃঢ়তা। আপনার বন্ধুরাও কিন্তু আপনার ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে আপনার সাথেই থাকবে। আপনি আরেকটু সচেতন হলেই গড়ে তুলতে পারেন আপনার ব্যাপারে সোজা সাপটা ইতিবাচক মতের একটি দল। আপনার ভক্তরা সবসময়ই সাহায্য করবে আপনাকে। এটা খুবই কাজে দেয়। কারণ, জীবনে তো সমস্যার শেষ নেই, শেষ নেই টানাপড়েনেরও। বিপর্যয় নেমে আসলে কাজে দেয় এই মানুষগুলোই। তখন সহজেই আপনি আবার ফিরে পেতে পারেন আত্মবিশ্বাস। নিজেকে রাখতে পারেন সতেজ।

নিজের মেধাকে কাজে লাগান
ব্যক্তিত্ব এমন এক বস্তু যা কৃত্রিম হতে পারে না। আপনার ভেতরে মেধা না থাকলে আপনি শুধু উপরে প্রকাশ সম্ভব নয়, সেটা ধরাও পড়ে যাবে মানুষের চোখে সহজেই। তাই একটু পরিশ্রমী হন, নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ করুন এমন কিছু যা শুধু আপনিই পারেন। আপনাকে একক করে গড়ে তুলবে, সবার থেকে আলাদা করবে এমন গুণকে সামনে নিয়ে আসুন। এভাবেই সবার নজরে থাকবেন আপনি। প্রয়োজনে নিজেকে সময় দিন, গড়ে তুলুন। আত্মচর্চার মাধ্যমে বাড়ান নিজের দক্ষতা।

সময়মত কাজ করুন
যে কাজটিই শুরু করবেন অবশ্যই সময়মত শেষ করবেন। সময়ের সাথে সাথে অনেক কাজের আর আগের মত মূল্যমান থাকে না। যেমন আপনি কোন সময়ের প্রেক্ষিতে সেই বিষয় নিয়ে একটা গল্প লিখতে শুরু করলেন। কিন্তু শেষ আর করছেন না। বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। তাৎক্ষণিক মানুষের মনে সেই ঘটনার যে রেশ ছিল তা যখন কেটে যাবে তখন আপনার গল্পও কিন্তু মূল্য হারাবে। ইতিহাস তৈরি করে যেসব ঘটনা সেগুলোর কথা আলাদা। কিন্তু জীবনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সময়ের কাজ সময়েই শেষ করতে হবে আপনাকে। এই নিয়ম না মানলে পিছিয়ে পড়বেন, ভিড়ে হারিয়ে যাবেন।

রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন
একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ অবশ্যই যে কোন জায়গায় তাঁর রাগ প্রকাশ করেন না বা ব্রাস্টাউট হন না। তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানেন। পরিস্থিতি সবসময়য় ইতিবাচক হবে না, এটাই স্বাভাবিক। আপনি যখন পথে বেড়োবেন তখন সব যে ভাল ঘটবে না তা জেনেই বের হতে হবে। আপনার কষ্ট করে দাঁড় করানো কাজটা বসের একদমই অপছন্দ হতে পারে, ঘটতে পারে এমন অনেক কিছুই। আপনাকে শিখতে হবে আত্মনিয়ন্ত্রণ।

বই পড়ুন
যতই পড়বেন, জানবেন ততই গড়ে তুলতে পারবেন নিজেকে। একটি ভাল বই মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, বদলে দিতে পারে আপনার চোখে জীবনের মানে। ভাল ভাল বই পড়ুন, মানুষের জীবন সংগ্রামের গল্প পড়ুন। আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে একজন চে গুয়েভারা, আপনাকে সাহসী করে তুলতে পারে আনা কারেনিনা। এমন অনেক মানুষের বাস্তব জীবনের গল্প হতে পারে আপনার শক্তি।

মেডিটেশন
নিজেকে শান্ত করতে, লক্ষ্যে স্থির থাকতে মেডিটেশনের বিকল্প নেই। আপনার মনকে স্থির করে ধ্যান পৌঁছে দিতে আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে। নিয়মিত ধ্যান করুন, নিজের ব্যক্তিত্বকে গড়ে তুলুন ভিন্নভাবে।



মন্তব্য চালু নেই