আগেই চূড়ান্ত হয়েছে হিলারির মনোনয়ন, প্রার্থিতার লড়াই সাজানো!

গত বছরেই হিলারি ক্লিনটনকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেছে ডেমোক্র্যাট শিবির; এমন দাবি করেছে কানাডাভিত্তিক এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট গ্লোবাল রিসার্চ। ওই ওয়েবসাইটের এক রচনায় দাবি করা হয়েছে, প্রার্থিতার যে লড়াই চলছে, তা সাজানো। যদিও এই দাবির পক্ষে যথাযথ তথ্যপ্রমাণ হাজির করা হয়নি। তবে কাউন্টার পাঞ্চ নামের বিকল্প সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অপর এক লেখাতেও সুপার ডেলিগেটসদের ভোট কিনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে আগেই হিলারি প্রার্থিতা নিশ্চিত করেছেন বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা বাংলা প্রেস।

গ্লোবাল রিসার্চের ওই প্রবন্ধে রাজনীতি বিষয়ের লেখক স্টিফেন লেন্ডম্যান দাবি করেন, ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে হিলারির প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা। লেন্ডম্যান জানিয়েছেন, ঐদিন হিলারি ও স্যান্ডার্স দু’জনই অঙ্গীকার করেছেন দল তাদের যে ভূমিকায় দেখতে চাইবে, তারা সেই ভূমিকা অনুযায়ীই কাজ করবেন। তবে গত বছরের ১৫ এপ্রিলের বৈঠকের বিষয়বস্তু নিশ্চিত করা যায়নি।

এরআগে সোমবার হিলারি ক্লিনটন তার মনোনয়ন নিশ্চিতের খবর দিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এবং সংবাদমাধ্যম এনবিসি। জুলাইয়ের ডেমোক্র্যাটিক কনভেনশনের আগেই এমন সিদ্ধান্ত দেওয়ার ঘটনাকে নীতিবিরুদ্ধ সাংবাদিকতা বলে উল্লেখ করেন স্যান্ডার্স শিবির। তারা প্রশ্ন তোলেন এই ধারার সাংবাদিকতার নৈতিকতা নিয়ে। রাজনীতি বিশ্লেষকরাও এপি-এনবিসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

দিজ ক্যান্ট বি হ্যাপেনিং নামের এক অনলাইন সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডেভ লিন্ডরফ। তিনিও বিকল্প সংবাদমাধ্যম কাউন্টার পাঞ্চে লেখা এক নিবন্ধে বলেছেন, সুপার ডেলিগেটসদের মধ্যে অন্তত একশ’ জন টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছেন হিলারির কাছে। তার দাবি অনুযায়ী, বাকিদের মধ্যে রয়েছেন অনির্বাচিত এবং লবিস্টরা। লিন্ডরফ আরও দাবি করেছেন, ‘হিলারির মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়া’র পেছনে কর্পোরেট মিডিয়ার কারসাজি রয়েছে।

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনের প্রার্থিতা বাছাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্র্যাটদের ডেলিগেট সংখ্যা ৪,৭৬৩ জন। এদের মধ্যে প্রাইমারি আর ককাস থেকে নির্বাচিত ডেলিগেটের সংখ্যা হবে ৪২৫১ জন। আর সুপার ডেলিগেটের সংখ্যা ৭১২ জন। মোট ৪৭৬৩ জন সাধারণ ও সুপার ডেলিগেটের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সংখ্যক ডেলিগেট যাকে ভোট দেবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন ডেমোক্র্যাটদের হয়ে। সে হিসেবে প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে একজন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে পেতে হবে ২৩৮২ জন ডেলিগেটের সমর্থন। জুলাইয়ে ফিলাডেলফিয়ায় প্রার্থী বাছাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশন। সেই সম্মেলনেই ডেলিগেটদের সমর্থন আর সুপার ডেলিগেটদের ভোটে নির্ধারিত হবেন ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।

সুপার ডেলিগেটসরা ভোট দেবেন ন্যাশনাল কনভেনশনে। তারা এখন যাকেই সমর্থন করুন না কেন, জুলাইয়ের ডেমোক্র্যাটিক কনভেনশনে তারা সেই সমর্থন বদলে অন্য কাউকে ভোট দিতে পারেন। তবে সেই ন্যাশনাল কনভেনশনের আগেই এপি এবং এনবিসি নিউজের পক্ষ থেকে সোমবার দাবি করা হয়, এরইমধ্যে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে ফেলেছেন হিলারি। তারা জানায়, হিলারির ১ হাজার ৮১২ জন ডেলিগেটের সমর্থনের সঙ্গে যোগ হওয়া ৫৭১ জন সুপার ডেলিগেটের সমর্থন তার প্রার্থিতা নিশ্চিত করেছে। এপির দাবি, সুপার ডেলিগেটসরা মার্কিন ওই বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন যে তারা তাদের সমর্থন বদলাবেন না। যদিও সুপার ডেলিগেটসরা যে তাদের এখনকার সমর্থন বদলাবেন না, তা এপি কী করে নিশ্চিত হচ্ছে তা তারা জানাননি। তারা জানাননি কেন তারা সুপার ডেলিগেটসদের কথার ওপর ভরসা করছে। তাই এপি-এনবিসির দাবিকে ভিত্তি হিসেবে ধরে হিলারির প্রার্থিতা চূড়ান্ত বলা যায় কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।



মন্তব্য চালু নেই