আগ্নেয়াস্ত্র থাকতেও কুপিয়ে খুনের কারণ কী?

ঢাকার গুলশানে আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গিরা ২০ জন পণবন্দিকে খুন করেছে৷ সেনা সদর দফতর আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই জানিয়ে দিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নঈম আশফাক চৌধুরি৷ তিনি জানান, ওই ২০ জন পণবন্দিকে শুক্রবার রাতেই চপার দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে৷ পাশাপাশি, জঙ্গি নিকেশ করতে সেনা পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’র বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে৷ বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে যতজন মুক্তমনা, বুদ্ধিজীবী, ধর্মনিরপেক্ষ ও সংখ্যালঘু (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান) খুন হয়েছেন তার প্রায় সবকটিই কুপিয়ে খুন৷ কিছু ক্ষেত্রে গুলি করার পরও ‘শিকার’-কে কোপানো হয়েছে৷ প্রকাশ্যেই এই খুন হয়৷ শুক্রবারের জঙ্গিহানায় পণবন্দিদেরও

কুপিয়ে খুন করা হয়েছে৷ তবে জঙ্গিদের হাতে একসঙ্গে এতজনের খুন প্রতিবেশী রাষ্ট্রে বিরল ঘটনা৷

আগ্নেয়াস্ত্র থাকতেও জঙ্গিরা কেন চপার দিয়ে কুপিয়ে খুন করল ?
এর পিছনে রয়েছে ইসলামকে অপব্যাখ্যা করা এক সুচতুর প্রক্রিয়া৷ ধর্মান্ধ যুবকদের বেহস্ত (স্বর্গ) লাভের স্বপ্ন দেখিয়ে কুপিয়ে খুনের তালিম দেওয়া হয়৷ মগজ ধোলাইয়ের পর্বে নব্য জঙ্গিদের নিষ্ঠুরতার পাঠ বা সওয়াব-ও শেখানো হয়৷ আসলে এটি একটি আরবি শব্দ৷ এর বাংলা করলে হয় “পুরস্কার”। ইসলাম অনুযায়ী, সওয়াব বলতে কিন্তু বোঝায় ভালো কাজ এবং আল্লাহ্র প্রতি ভক্তির প্রতিদান স্বরূপ আধ্যাত্মিক পুরস্কার৷ আর ধর্মকে ভিত্তি করে তার ভুল ব্যাখ্যা করা কট্টরপন্থী সংগঠনগুলি সওয়াব বলতে শেখায় কতটা নৃশংস উপায়ে ঘাড়ের পিছনে চপারের কোপ মেরে প্রতিপক্ষের মৃত্যু নিশ্চিত করা যায়, সেটাই৷

কুপিয়ে খুনের এই রেওয়াজ বাংলাদেশেই বেশি দেখা যাচ্ছে৷ আর এক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে কিন্তু ‘কাফের’দের গুলি করে খুন করে সন্ত্রাসবাদীরা৷ সেক্ষেত্রে সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের ক্ষেত্রে ঘটেছিল ব্যতিক্রমী ঘটনা৷ আফগানিস্তানেও গুলি করা হয়৷ দুই ক্ষেত্রে খুনের পিছনে রয়েছে তালিবান গোষ্ঠীগুলি৷ আরব দুনিয়াতে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ক্ষেত্র ছাড়া ইরাক, সিরিয়া সহ বিভিন্ন দেশে আইএসও সচরাচর ‘শিকার’-কে কুপিয়ে খুনের রাস্তা নেয় না৷ তারা গর্দান নেয় বটে, তবে তেমন কাজ গণহারে করে না৷



মন্তব্য চালু নেই