আজও যে গ্রামে পাকা বাড়ি নেই! কিন্তু কেন?

প্রকৃতি-দেবতার রোষ নেমে আসতে পারে গোটা গ্রামের উপরে। মুহূর্তে ছারখার হয়ে উঠতে পারে চারদিক। তাই ২১ শতকেও অত্যাধুনিক জীবনের আড়ম্বরকে দূরে সরিয়ে রেখেছে এই গ্রাম। গোটা গ্রাম খুঁজলেও চোখে পড়বে না একটিও পাকা বাড়ি। চারিদিকে শুধুই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাটির ঘর। গ্রামবাসীদের পাকা বাড়ি করার সাধ্য নেই, এমন পরিস্থিতিও নয়। তা হলে? আসলে বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাস থেকেই গ্রামবাসীরা আজও বাস করছেন কুঁড়ে ঘরে। ছাউনি, কোথাও খড়ের কোথাও বা টালির। রাজস্থানের মরুপ্রান্তরে অবস্থিত এই গ্রামের নাম দেবমালি। গ্রামবাসীরা দেব নারায়ণের উপাসক। তাই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস দেবতা চান না তাঁরা পাকা ঘরে বসবাস করুন। কারণ, এর আগে গ্রামের একজন পাকা ঘর বানানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা ধসে পড়ে যায়। এর পর থেকে গ্রামবাসীদের মনে কুঁড়ে ঘরে বাস করার ধারণা একেবারে স্থায়ী হয়ে গিয়েছে। বহু জন অন্য গ্রামে পাকা বাড়ি বানিয়েছেন বটে, তবে তাঁরা এখনও দেবমালি গ্রামে কুঁড়ে ঘরেই বাস করেন।

এমনকী, গোটা গ্রামে কোথাও গ্যাস বা কয়লার উনুন মিলবে না। আজও কাঠের জ্বালানি দিয়েই চলে রন্ধনকার্য। বিজলি বাতিতেও দেবতাদের অসুবিধা হতে পারে বলে গ্রামে ইলেক্টিক লাইন ঢুকতে দেননি গ্রামবাসীরা। সূর্য ডুবলেই এখানে আজও ঘরে ঘরে জ্বলে লন্ঠন বা কুপির আলো। নবীন প্রজন্মও এতদিন ধরে চলে আসা নিয়মের বাইরে বের হন না। দেবমালি গ্রামের মানুষরা সকলেই চাষি। কৃষিকর্মের কাজ করে জীবন চলে। কিন্তু, কোনও গ্রামবাসীর নামেই কোনও চাষের জমি নেই। সমস্ত জমি রেজিস্ট্রার্ড আছে দেব নারায়ণের নামে। গ্রামবাসী নিজেদের মধ্যে প্রত্যেক পরিবারের জমি চিহ্নিত করে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী গ্রামবাসীরা জমিতে চাষ করেন। ৮০টি পরিবারের বাস দেবমালি গ্রামে। এই গ্রামের নিয়ম এতটাই কড়া যে, আজও গ্রামে কোথাও আমিষ খাবার হয় না। গ্রামবাসীরা সকলেই নিরামিশাষী। এমনকী, মদ্যপানও নিষিদ্ধ এই গ্রামে।-এবেলা



মন্তব্য চালু নেই