আজ জিতলেই ফাইনাল

গত শনিবার সুসংবাদ পেয়ে দিন শুরু করেছিলেন টাইগাররা। সতীর্থ তামিম ইকবাল বাবা হয়েছেন, সে খবর ঘুম থেকে উঠেই পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। এরপর তামিমকে অভিনন্দন জানানো। বাকি গল্পটা তো সবারই জানা। রাতে বাঘের গর্জনে ধরাশায়ী সিংহ। টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম জয়।

সেদিন সুসংবাদ নিয়ে দিন শুরু করলেও আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে মিশ্র অনুভূতি বাংলাদেশ শিবিরে। একদিকে মুস্তাফিজকে হারানোর বেদনা, অন্যদিকে তামিমকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ।

মুস্তাফিজের সঙ্গে তামিমের তুলনা চলে না, ঠিক তেমনই তামিমের সঙ্গে মুস্তাফিজেরও না। দলে দুজনের ভূমিকা ভিন্ন, কেউ কারো থেকে কম নন।

অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে সে কথাটাই মনে করিয়ে দিলেন, ‘মুস্তাফিজের না থাকা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি। ও যেটা দলের জন্য দেয়, সেটা সবসময়ই দলের জন্য অসধারণ কিছু।’

মাশরাফির কণ্ঠে মুস্তাফিজকে হারানোর সুর যতটা বিষণ্ন ছিল তামিমকে ফিরে পাওয়ার সুর ঠিক ততটাই প্রাণবন্ত। মাশরাফি বলেন,‘তামিমের না থাকা সবসময় আমাদের জন্য কিছুটা অস্বস্তির ব্যাপার। সব ফরম্যাটে সে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। তামিম অনেক দিন ধরে খেলছে, সে অনেক অভিজ্ঞ।’

মুস্তাফিজুর রহমানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে। সে ম্যাচে মোহাম্মদ হাফিজ ও শহীদ আফ্রিদির উইকেট নিয়েছিলেন ‘কাটার বয়’ মুস্তাফিজ। ম্যাচে জয়ও পেয়েছিল বাংলাদেশ। মাশরাফি জানিয়েছেন, মুস্তাফিজের পরিবর্তে যে-ই একাদশে জায়গা পাবেন, তার কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। কারণ বিস্ময়কর পেসারের বিকল্প একজনও নেই।

পাকিস্তানকে শেষবার ঘরের মাটিতে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে সেবারের পাকিস্তান দল আর এবারের দলটির পার্থক্য অনেক। দলটিতে রয়েছে সদ্য পিএসএল খেলে আসা বেশ কয়েকজন উদীয়মান ও প্রতিভাবান ক্রিকেটার। দলটিতে ফিরে এরই মধ্যে চমক দেখাচ্ছেন পেসার মোহাম্মদ আমির। ম্যাচ উইনার ও অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির কথা আলাদা করে বলার কিছু নেই। রয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিকের মতো অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে দলটিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।

তবে নিজেদের দিনে বাংলাদেশ কতটা ভয়ঙ্কর, তা সবারই জানা। অন্তত সীমিত পরিসরের ক্রিকেটে। তার ওপর এশিয়া ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। তাই তো নিজেদের মাঠে বেশ নির্ভার হয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন মাশরাফি। আজকের ম্যাচটা জিতলেই নিশ্চিত হবে ফাইনালের টিকিট। তাই, আজ সেরা খেলা খেলতে কার্পণ্য করবেন না টাইগাররা।

‘জয়-পরাজয় দিয়েই সবসময় সবকিছুর বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। সবাই জয়ের জন্যই খেলে। জিততে পারলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে- এটাই স্বাভাবিক। আমাদেরও তাই। জেতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও জিততে চাই। এদিকেই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশকে হারানোর বিকল্প নেই পাকিস্তানের। পাকিস্তানের বোলিং কোচ হিসেবে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া আজহার মাহমুদ বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশকে হারাতে পারবে তার দল। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম ম্যাচে ভুল করেছিলাম। দ্বিতীয় ম্যাচে তা শুধরে ফেলেছি। হয়তো বা নিজেদের সেরাটা দিতে পারিনি। তবুও আমরা জয় পেয়েছি। আশা করছি, পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ভালো করেই ফাইনাল খেলব।’

এশিয়ার দুই জায়ান্টের লড়াই বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।



মন্তব্য চালু নেই