আপনি কী পানিশূন্যতায় ভুগছেন?

শীতকালে বেশিরভাগ মানুষেরই পিপাসা কম পায়, ফলে পানি পান করাটা কম হয়। এ থেকে দেখা দিতে পারে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা, যা অনেকেই লক্ষ্য করেন না। ক্লান্তি এবং পিপাসা ছাড়াও পানিশূন্যতার অনেক উপসর্গ আছে। আপনার ত্বক, পেশি এমনকি নিঃশ্বাস থেকে পাওয়া যেতে পারে পানিশূন্যতার প্রমাণ। দেখে নিন, এসব উপসর্গ কি আপনারও আছে?

১) নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ

আমাদের মুখে লালা উৎপন্ন হয় এবং তা মুখের দুর্গন্ধকে দমিয়ে রাখে। কিন্তু ডিহাইড্রেশনের কারণে যথেষ্ট লালা উৎপন্ন হতে পারে না। মুখ শুকিয়ে যায়। ফলে মুখে জীবাণু বেড়ে যায় এবং নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয়। জিহ্বা ফুলেও যেতে পারে।

২) শুষ্ক ত্বক

অনেকেই মনে করেন ডিহাইড্রেশন মানেই ঘাম হবে। কিন্তু বেশি ডিহাইড্রেশন হলে পানির অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এতে খুব গরমও লাগতে পারে, মাথা ঘোরে এবং অজ্ঞান হয়ে যাবার মত অবস্থা হয়। শীতকালেও এই ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।

৩) পেশিতে টান লাগা

শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে পেশিতে টান পড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। পেশি বেশি ক্লান্ত হয়ে গেলে তাপ থেকে তাতে টান পড়ে। এছাড়া শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের পরিবর্তন, সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের মাত্রায় পরিবর্তন থেকেও পেশিতে টান পড়ে।

৪) জ্বর এবং কাঁপুনি

ডিহাইড্রেশন হলে জ্বর আসতে পারে, সাথে থাকতে পারে কাঁপুনি। জ্বর ব্যাপারটা বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে গেলে ডাক্তার দেখানো দরকার।

৫) মিষ্টি খাবার খাওয়ার ইচ্ছে

তৃষ্ণা তো থাকবেই। ডিহাইড্রেটেড অবস্থায় শরীরের কিছু কিছু অঙ্গ যেমন লিভার পানি ব্যবহার করে অন্যান্য কাজ করতে পারে না। ফলে আমাদের খাওয়ার ইচ্ছে বাড়ে। বিশেষ করে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে বেশি হয়। এমন ইচ্ছে হলে বেশ কিছুটা পানি আছে এমন ফল বা সবজি খেতে পারেন। এছারাও খেতে পারেন দই।

৬) মাথাব্যাথা

আমাদের মস্তিষ্কের চারপাশে একটা ফ্লুইড স্যাক থাকে, যা খুলির সাথে সংস্পর্শে আসতে দেয় না মস্তিষ্ককে। ডিহাইড্রেশন হলে এই ফ্লুইড কমে যায় এবং মস্তিষ্কের সাথে খুলির সংস্পর্শের কারণা মাথা ব্যাথা করতে পারে।

এই সব উপসর্গ দেখলে বোঝা যেতে পারে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন। সমস্যার সমাধানে পানি পান করা শুরু করতে হবে এবং সবসময় যথেষ্ট পানি পানের অভ্যাস বজায় রাখতে হবে। তবে এসব উপসর্গ আছে তারপরেও যদি আপনার সন্দেহ হয় সমস্যাটি আসলে পানিশূন্যতা নয়, তবে নিশ্চিত হয়ে নিতে পারেন এই

দুইটি টেস্ট থেকে-

স্কিন টেস্ট- হাতের উল্টো পিঠে, কব্জির যেখানে আপনার হাতঘড়ি পরেন এবং যেখান থেকে আপনার আঙ্গুল শুরু হয়েছে- এই দুই জায়গার মাঝে অল্প কিছুটা ত্বক টেনে ধরুন হাত থেকে আধা সেন্টিমিটার ওপরে এবং এরপর ছেড়ে দিন। এই ত্বক জায়গামত ফিরে আসবে দুই সেকেন্ড বা তার কম সময়ে। যদি বেশি সময় লাগে তাহলে আপনি ডিহাইড্রেটেড।

ইউরিন টেস্ট- মুত্রের রঙ থেকে বোঝা যেতে পারে আপনার শরীরে যথেষ্ট পানি আছে কিনা। পানি যথেষ্ট থাকলে মুত্র হবে স্বচ্ছ এবং অল্প একটু হলদেটে ভাব থাকতে পারে। কিন্তু পানিশূন্যতা থাকলে মুত্রের রঙ হবে বেশ হলুদ থেকে শুরু করে কমলা রঙের। মুত্রের রঙ কমলা হলে তা বেশ উদ্বেগের ব্যাপার।



মন্তব্য চালু নেই