আপনি জানেন কি আতা ফল সম্পর্কে ?

আতা গাছ বাংলাদেশ ও ভারতে বসতবাড়ীর আঙিনায় এবং বনে-জঙ্গলে জন্মে থাকে। তবে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়ে থাকে।

গাছের আকার খুব বড় নয়, উচ্চতায় ৩ থেকে ৫ মিটার। শীতকালে এর পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তকালে নতুন পাতা গজায়, ফুল ধরে। পাতার আকৃতি বল্লমের মতো, অগ্রভাগ সরু। এর ফুল দেখতে কাঁঠালী চাঁপার মতো যার রঙ হালকা সবুজ থেকে সবুজাভ হলুদ হয়ে থাকে। কাঁচা ফল খাওয়া যায় না। বেলে দো-আঁশ মাটিতে আতা গাছ ভাল জন্মে। বীজ থেকে এর চারা করা হয়। এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ফুল ধরে এবং ৪/৫ মাসের মধ্যে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফল পেকে যায়। আতাফল হৃৎপিন্ড আকৃতির হয়ে থাকে।

আতা ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের উপস্থিতি ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালীকরণ হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়াম, হজমের জন্য ফসফরাস, শরীরের ডিএনএ এবং আরএনএ সংশ্লেষণ ও শক্তি উত্পাদনের জন্য ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ পদার্থ সরবরাহ অকরে থাকে। ফলে এটি শিশুদের জন্য অত্যন্ত উপকারি।

প্রতি ১০০ গ্রাম আতা থেকে যে পরিমাণ পুষ্টি মূল্য পাওয়া যায় তা হলো:
শর্করা 25 গ্রাম, পানি 71.5 গ্রাম, প্রোটিন 1.7 গ্রা্‌ ভিটামিন এ 33 IU, ভিটামিন সি 192 মিলিগ্রাম, থিয়ামিন 0.1 মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাবিন 0.1 মিলিগ্রাম, নিয়াসিয়ান 0.5 মিলিগ্রাম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড 0.1 মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম 30 মিলিগ্রাম, আয়রন 0.7 মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম 18 মিলিগ্রাম, ফসফরাস 21 মিলিগ্রা, পটাসিয়াম 382 মিলিগ্রাম, সোডিয়াম 4 মিলিগ্রাম।

এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যোপদান রয়েছে। পাকা আতার শাঁস মিস্টি হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। এর কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে। যেমন পাকা আতার শাঁস বলকারক, বাত-পিত্তনাশক ও বমনরোধক

আতাফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা :
আতাফলে রিবোফ্লাভিন ও ভিটামিন সি এর উপস্থিতির কারনে চমৎকার চোখের দৃষ্টিশক্তি স্বীকার সহায়তা করতে পারে এর খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধি করে ও পেটের সমস্যা দূর করে। এর পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬ রক্তের উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। আতা ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা একটি উন্নতমানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফ্রি রেডিক্যাল নিয়ন্ত্রণে রক্ষা করে। এছাড়া ত্বকে বার্ধক্য বিলম্বিত করে। আতা ফলের ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে উপস্থিত ভিটামিন এ চোখ, চুল ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আতাফলের খাদ্যউপাদান এনিমিয়া প্রতিরোধ করে।

আতাফলের ঔষধি গুণ :
আতাগাছের শেকড়ের ছাল আমাশয়ের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আতাফলের শাঁসের রস রক্তের শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অপুষ্টিজনিত সমস্যায় আতাফলের রসের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। যে ফোঁড়া পাকেও না আবার বসেও না, এমন ফোঁড়ায় আতার বীজ বা পাতা বেটে সামান্য লবণ মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে পুঁজ বের হয়ে যায়। পাতার রস উকুননাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।



মন্তব্য চালু নেই