আপনি তো বড় খেলোয়াড়, খালেদাকে সুরঞ্জিত

সংলাপ চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা মন্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছেন, বল এখন শেখ হাসিনার কোর্টে। বল না কি আমাদের কোর্টে, কোন বল? আপনি তো বড় খেলোয়াড়। কত জায়গায় খেলেন। নওয়াজ শরীফের কথায় কখনো খেলেন, কখনো ক্রিকেট, কখনো হকি, কখনো ভলিবল, কখনো ফুটবল; কোনটা? এখন তো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। আপনি কোনটা খেলবেন?’

তিনি বলেন, ‘আপনার ফুটবলটা হারিয়েছিলেন কোথায়? আর পাইছিলেন কোথায়? ফুটবল পাইছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যা করার মাধ্যমে, জাতির চার নেতাকে হত্যা করে দেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করে। ওই ফুটবল যদি খোঁজেন, তাহলে আপনি আর পাবেন না। এটা বলতে পারি, ওই ফুটবল আপনি ইহজীবনেও পাবেন না, পাবেন না, পাবেন না। ওটা যে চলে গেছে, হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে। ওটা তো আপনি বুঝতেই পারতেছেন।’

শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামী ঐক্যজোটের সম্মেলনে অংশ নিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘দেশের সঙ্কট ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি। বল এখন শাসক দলের কোর্টে। তারা সংঘাতের পথ ছেড়ে সংলাপের পথে সমস্যার সমাধান করবেন বলে আমি আশা করি।’

সুরঞ্জিত বলেন, ‘আর যদি ওই ফুটবল বলতে আপনি নির্বাচন চান, নির্বাচন তো হতেই পারে। আমরা তো নির্বাচনে অবিশ্বাসী না। আমরা সংবিধানে বিশ্বাসী, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘ওই নির্বাচনে আপনি অবশ্যই অংশগ্রহণ করবেন। আপনাকে বাদ দেয়া হবে না। তবে একটা কথাই বলে দেই, আপনি যে ভুলটি একবার করেছেন, নওয়াজ শরীফের কথায়, আইএসের কথায়, তা আর করবেন না।’

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিব উদ্দীন আহমেদ বলেছিলেন, ‘অতীতের অর্জন ম্লান হয়ে গেছে।’ তার এ বক্তব্যেরও সমালোচনা করেছেন সুরঞ্জিত।

তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনটা হচ্ছে। এখানে ৮-১০ জন মানুষ মারা গেছে। তখন তো আর মুখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। এই নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কেও আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। এদেরকে নির্বাচন কমিশন রক্ষা করতে পারেনি। আমাদের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের সবচেয় শক্তিধর নির্বাচন কমিশন। উনি ইচ্ছে করলে নির্বাচন বাতিলও করতে পারেন, আবার বহালও রাখতে পারেন।’

আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীর সাজার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে সুরঞ্জিত বলেন, ‘দুই মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন আর উনি বলেছেন দেখাইবেন। উনি দেখাইও দিছেন। দুই মন্ত্রী বলেছেন মাফ চাই, মাফ করে দাও। আপনি প্রধান বিচারপতি, আপনার তাদেরকে মাফ করে দেওয়া উচিত ছিল। তা না করে আপনি দেখাইয়া দিছেন। এতে ক্ষতিটা কার হলো?’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ পংকজ দেবনাথ প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই