আফিম চাষ নিয়ে যেখানে শুরু হলো সংঘর্ষ

মিয়ানমারে আফিম চাষীদের সঙ্গে মাদকবিরোধী একদল খ্রিস্টান স্বেচ্ছাসেবকের সংঘর্ষ হয়েছে। খ্রিস্টান স্বেচ্ছাসেবকরা একটি আফিম ক্ষেত নষ্ট করতে গেলে ক্ষেতমালিকরা তাতে বাধা দেয় এবং সংঘর্ষের সূচনা হয়।

মিয়ানমারের একটি গণমাধ্যম জানায়, দেশটিতে খ্রিস্টানদের মাদকবিরোধী সংগঠন ‘পাট জাসন গ্রুপ’ সপ্তাহজুড়ে আফিম ক্ষেত ধ্বংসে কাজ করে আসছে। সংগঠনটি সামরিক বাহিনীর মতো নির্দিষ্ট পোশাক পরে থাকে এবং দেশের সেবক বলে দাবি করে। তারা মিয়ানমারের ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে আফিম ক্ষেত ধ্বংস করতে গেলে তাদের সঙ্গে চাষীদের সংঘর্ষ বাধে।

মিয়ানমার সরকার আফিম উৎপাদন বন্ধ করতে ১৯৯৯ সাল থেকে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে আফিম উৎপাদনের সাথে দেশের অধিকাংশ চাষী জড়িত থাকার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এসব চাষীর আয়ের একমাত্র উৎস আফিম উৎপাদন। ২০১৯ সাল নাগাদ তারা আফিম উৎপাদন সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে মিয়ানমার।

সেনাবাহিনীর একটি অংশ, বিদ্রোহী ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা চাষীদের কাছ থেকে আফিম উৎপাদনের জন্য নিয়মিত চাঁদা নিয়ে থাকে। আফিম দেশটিতে ডায়রিয়া, আমাশয় ও অন্যান্য রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হলেও গত এক দশক ধরে চাষীরা বাণিজ্যিক-ভিত্তিতে এটি উৎপাদন শুরু করে আসছে। মিয়ানমার থেকে চীন, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানে তারা এই আফিম রপ্তানি করে থাকে।

উল্লেখ্য, আফিম বা পপি (Opium poppy) গাছের ফুল থেকে আফিম এটি তৈরি হয়। সব পপি ফুল থেকেই মাদক দ্রব্য তৈরি হয় না। পপি ফুলের এমন অনেক প্রজাতি রয়েছে যা শুধু বাগানের শোভা বর্ধন করে। এই গাছের ফল যখন পরিপক্ক হয় তখন ব্লেড দিয়ে ফলের গায়ে গভীর করে আচর কেটে দেয়া হয়। এর পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর গাছটির ফল থেকে কষ বের হয় এবং চাষীরা তা সংগ্রহ করে। এটাই হলো আফিমের কাঁচামাল।। এরপর বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি করা হয়। আফিম থেকে হিরোইন ছাড়াও মরফিন পাওয়া যায়, যা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।



মন্তব্য চালু নেই