আবার ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে বাংলাদেশ!

গত বছর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের কথা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি দর্শকরা। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেই ম্যাচটিতে পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনা নিয়ে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় হয়েছিল।

বিশেষ করে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মার একটি ক্যাচ আউট না দিয়ে আম্পায়ার ইয়ান গুল্ড ‘নো বল’ ঘোষণা করেন। তখন এমন ‘বিতর্কিত’ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণও। সেই সময় টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আম্পায়ার (ইয়ান) গুল্ডের বাজে সিদ্ধান্ত। বল অবশ্যই কোমরের ওপরে ছিল না। রোহিতের ভাগ্য ভালো।’

শুধু এই সিদ্ধান্তই নয়, মাহমুদউল্লাহর একটি ক্যাচ ভারতীয় ফিল্ডার শিখর ধাওয়ান তালুবন্দি করার সময় বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করলেও সেটিকে আউট দেন আম্পায়াররা।

পাকিস্তানি আম্পায়ার আলিম দার ও ইংলিশ আম্পায়ার ইয়ান গুল্ডের বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্তে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল বলে জনশ্রুতি আছে। আর এসব ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তৎকালীন সময়ের আইসিসির প্রেসিডেন্ট আ হ ম মুস্তফা কামাল ফাইনালে পুরস্কার পর্যন্ত দিতে পারেননি। পরে তিনি আইসিসির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগও করেছিলেন।

আবার এসেছে আরেকটি বিশ্বকাপ। আবার বাংলাদেশকে নিয়ে শুরু হয়েছে আরেকটি বিতর্ক। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচের পরই এই বিতর্কের সূচনা করেন বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস ম্যাচের দুই আম্পায়ার।

বল করার সময় পেসার তাসকিন আহমেদ ও স্পিনার আরাফাত সানির কনুই নাকি ১৫ ডিগ্রির বেশি বেঁকে যায়। ভারতের আম্পায়ার সুন্দরম রবি ও অস্ট্রেলিয়ার রড টাকার খেলা শেষে ম্যাচ রেফারির কাছে এই অভিযোগ করেছেন। তাঁরা এই দুই বোলারের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ করেন। যে কারণে এই দুই বোলারকে পরীক্ষার মুখোমুখি হতেই হচ্ছে।

খবরটা শুনে অবাকই হয়েছেন বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। আম্পায়াররা তাসকিন ও আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন সন্দেহ করায় তাদের কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই বাংলাদেশ কোচ।

বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় এক সংবাদ সম্মেলনে কোচ বলেওছিলেন, ‘আমাদের জন্য খবরটি বিস্ময়ের হলেও তা মেনে নিতেই হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার বোলারদের নিয়ে যদি তাদের উদ্বেগ থাকে, তবে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়েও আমার উদ্বেগ আছে। কারণ আমি (বোলারদের) কোনো ভুল দেখছি না।’

বোলার অ্যাকশন নিয়ে এমন সন্দেহ পোষণ করার সময় নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ কোচ। তিনি বলেন, ‘তারা (তাসকিন ও সানি) গত ১২ মাস ধরে একইভাবে বল করে চলছে। তারা (আইসিসি) সেই সব ম্যাচ পরিচালনাও করেছে। গতকাল তারা অবশ্যই আলাদা কিছু দেখেছে। এটুকুই আমি বলতে পারি।’

শুধু কোচই নন, বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টও যে ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ, তা এখন বলাই যায়। হুট করে এমন অভিযোগ আনায় পুরো দলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হতেই পারে। তা ছাড়া আইসিসির সন্দেহ পোষণের পর বাংলাদেশ কোচ যেভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি বাংলাদেশের বিপক্ষে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে?

এই সন্দেহটা যে অমূলক নয় ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। কারণ এই দুই বোলার গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলছেন। আইসিসির বড় বড় টুর্নামেন্টেও তাঁরা খেলেছেন। তাহলে এখন নতুন করে এই সন্দেহ পোষণের কারণ কী?



মন্তব্য চালু নেই