‘আমার নাম আকাশি… আমি হারিয়ে গিয়েছি’

শিশুটি সবার মনে দাগ কেটেছে। ফুটফুটে বাচ্চাটির মায়াবী চেহারা। বয়স তিন বছর হলেও চটপট করে কথা বলে সে। যিনি দেখেছেন তিনি বলছেন, ‘আহারে। বাচ্চাটির খোঁজে মা-বাবা হয়তো পাগলের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।’ হারিয়ে যাওয়া এই শিশুটির নাম আকাশি। তাকে রোববার ঢাকার শিশু আদালতে হাজির করে যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ। পরে আদালত রোববার শিশুটিকে রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত ছোটমনি নিবাসে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ১ লা আগস্ট ঢাকার ডেমরা রোডের মৃধাবাড়ী এলাকায় রাস্তায় ওপরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। তখন স্থানীয় দুই ব্যক্তি শিশুটিকে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে আসে। পরে শিশুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়। রোববার শিশুটিকে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের (সিএমএম) হাজতখানায় আনে যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশ। পরে শিশুটিকে ঢাকার আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে (ননজিআরও) আনা হয়। সেখানে শিশুটিকে দেখে পুলিশের একজন কর্মকর্তা আপেলসহ বিভিন্ন প্রকারের ফল এনে খাওয়ান।

সেখানেই শিশুটি প্রথম আলোকে বলে, ‘আমার নাম আকাশি। আমার আব্বুর নাম মনির। মায়ের নাম সালমা বেগম। আমি হারিয়ে গিয়েছি।’ ‘হারিয়ে গিয়েছি’ শব্দ উচ্চারণ করার পরপরই শিশুটি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। খানিকক্ষণ ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদেই চলে শিশুটি। একপর্যায়ে শিশুটি বারবার বলতে থাকে, ‘আমি আমার মায়ের কাছে যেতে চাই। আমি আমার বাবার কাছে যেতে চাই।’

পরে শিশুটিকে বিকেলে ঢাকার শিশু আদালতে তোলা হয়। তখন ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুস সাত্তারও আদালতের সামনে শিশুটির কাছে তার পরিচয় জানতে চান। তখনো শিশুটির তার বাবা-মায়ের নাম বলে। কিন্তু কোথায় তাঁদের বাসা তা বলতে পারেনি। কীভাবে সে হারিয়ে গেছে তাও বলতে পারে না।

আবদুস সাত্তার বলেন, ‘যে-ই শিশু আকাশিকে দেখেছে, তারই খারাপ লেগেছে। শিশুটির জন্য আমারও মন কাঁদছে। ওর বাবা-মায়ের জন্য খারাপ লাগছে। শিশুটিকে পাওয়ার জন্য ঢাকার শিশু আদালতে যোগাযোগ করলে নিশ্চয় সার্বিক সহযোগিতা করব।-প্রথম আলো



মন্তব্য চালু নেই