‘আমার বাবাকে ছেড়ে দাও, বাবা আমাকে বঙ্গবন্ধুর গল্প শোনাবে’

‘আমার বাবাকে ছেড়ে দাও। বাবাকে কষ্ট দিচ্ছো কেন? বাবাকে নিয়ে আমি বাড়ি যাব। বাবা আমাকে বঙ্গবন্ধুর গল্প শোনাবে। মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাবে।’

এভাবেই মৃত বাবাকে নিয়ে আহাজারি করছিল মুহিতুল ইসলামের মেয়ে সানজিদা বিলকিস বাঁধন (১৩)। একমাত্র মেয়েকে রেখে পৃথিবী ছেড়ে চলে তিনি।

রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে রোটারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির বাঁধন বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে আসে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তার কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের লাশঘরের সামনে চাচাতো ভাইকে জড়িয়ে বিলাপ করছিলেন বাঁধন।

লাশঘরে বাবার নিথর দেখে বাঁধন ডুকরে কেঁদে উঠেন। তাকে সেখান থেকে সরিয়ে আনতে বেগ পেতে হয় স্বজনদের।

এসময় উপস্থিত সবার চোখ ভিজে ওঠে। বাবা হারানো মেয়ের আর্তনাদ সবাইকে শোকার্ত করে তোলে।

মুহিতুল ইসলামের স্ত্রী সুলতানা ইসলাম অসুস্থ থাকায় হাসপাতালে আসতে পারেননি। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী।

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরের সরকারি কোয়ার্টারে স্ত্রী এবং একমাত্র কন্যাকে থাকতেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। কিডনিসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে তার রিসিপসনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ ছিলেন মহিতুল ইসলাম। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় ধানমণ্ডির ওই বাড়িতেই ছিলেন তিনি। সর্বশেষ ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর এএফএম মুহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই