আমি বন্ধুত্বে ভেদাভেদ মানি না : এক মেথরকে কন্ঠশিল্পী আসিফ

কন্ঠশিল্পী আসিফ। বেশ কিছু অসাধারণ প্রেমের গান দিয়ে যুব সমাজের হৃদয়ের মণিতে পরিণত হয়েছেন কুমিল্লার এই শিল্পী। বিদ্রোহী ও প্রতিবাদী ঘরনার লিখনীর মাধ্যমে আগের চেয়ে বেশি আলোচনায় দেশাত্ববোধক ‘সাবাশ বাংলাদেশ’ গানের এই শিল্পী।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। আওয়ার নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো।

ছবির মেয়েটার নাম ফুলপরী। ছোটবেলায় তাকে এই নামেই চিনতাম। ঐতিহাসিক ভাবে তারা ঋষি সম্প্রদায়ের লোক, অর্থ্যাৎ বংশ পরম্পরায় তারা সুইপার। ওর আরেকটা বোন ছিলো, নাম জলপরী। দু’বোন ছোটবেলায় পরীর মতই সুন্দর ছিলো ,আমার সমবয়সী।

ফুলপরীর মা বাসায় পরিচ্ছন্নতার কাজে আসলে তারা আমাদের সাথে খেলতো। আম্মা মুরগী পালতেন, আমিই দেখাশোনা করতাম। একধরনের পোকা আছে, নাম গুর্খা, যেগুলো গর্তে থাকে, উপর থেকে পানি ঢাললে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসতো, বের হলেই ফুলপরী ধরে ফেলতো। গুর্খা ধরে মেরে মুরগীকে খাওয়ানো ছিলো আমাদের এক ধরনের নিষ্ঠুর সুকুমার বৃত্তি।

বেশ কিছুদিন আগে মহল্লার রাস্তায় ফুলপরীর সাথে দেখা, তাকে বললাম দেখা করোনা কেন আমার সাথে!! সে বলল- ভাইয়া আপনি তো অনেক বড় মানুষ, আমরা মেথর, কিভাবে দেখা করি !! তাকে বললাম বন্ধুত্বে কখনোই কোন প্রকার ভেদাভেদ আমি মানিনা। গতকাল কুমিল্লার বাসায় তাকে আসতে বলেছিলাম, সে এসেছিলো। রোগে শোকে দারিদ্র্যে জরাজীর্ন ফুলপরীর জীবনমানের কোন উন্নতি নেই। তারপরও মুখে হাসি,প্রচন্ড আত্মসম্মান বোধ এবং বেঁচে থাকার সৎ প্রচেষ্টা ফুলপরীর প্রতি আমার শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই