“আমি হাত জোড় করে ক্ষমা চাচ্ছি, অতিরিক্ত লাভে জিনিসপত্র বিক্রি করব না”

ফেনী: ‘আমি হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছি, অতিরিক্ত লাভে জিনিসপত্র বিক্রি করব না। ক্রেতাদের সহনীয় লাভে বিক্রি করব।’ এভাবে শপথ বাক্য পাঠ করেন ফেনী শহরের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের মায়াবি কালেকশনের মালিক নজরুল ইসলাম।

রোববার (১৯ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা আকস্মিকভাবে এ বিপণী বিতানে অভিযান চালায়।

দোকান মালিক একটি শাড়ি ১৬ হাজার ৮’শ টাকা ক্রয় করে ২৯ হাজার ৫’শ টাকা অতিরিক্ত মুনাফায় বিক্রি করায় তাকে এভাবে মৌখিক মুচলেকা দিয়ে সতর্ক করেন। এটি ছাড়াও বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতানগুলোতে অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ঈদ মার্কেটে আসা ক্রেতারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম রোযা থেকে জেলার বিভিন্ন বিপণী বিতান, কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, খাবার হোটেল, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে রোববার ফেনী হকার্স মার্কেট সংলগ্ন কাঁচাবাজার ও পাইকারি বাজারে মূল্য তালিকা না প্রদর্শন করার অপরাধে মো. সেলিমকে নামে এক দোকান মালিককে দশ হাজার টাকা এবং রফিকুল ইসলাম নামে অপর এক দোকান মালিককে পাঁচ টাকা অর্থদণ্ডে দন্ডিত করেন ভ্রাম্যমান আদালত।

অন্যদিকে আড়তের দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা না থাকা ও খুচরা বিক্রেতাকে রশিদ না দেয়ার অভিযোগে বেলায়েত হোসেন নামে এক আড়তদারকে ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সময় শহরের কালিপালে রসমেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি করার অপরাধে রসমেলার মালিক সাইফুল ইসলামকে এক লাখ টাকা একই অপরাধে ফাইভ স্টার চাইনিজ রেস্টুরেন্টকে বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা জানান, ক্রেতাদের মনে স্বস্তি আনার জন্য শহরের সবচেয়ে বড় বিপণী বিতান গ্রান্ড হক টাওয়ারের বিভিন্ন দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিভিন্ন দোকানে কেনা দাম আর বিক্রি দামের তুলনা করে দেখা যায় তারা অতি উচ্চ হারে মুনাফা করছে। তিন হাজার তাকা মূল্যের পণ্য ছয় হাজার টাকায়, ছয় হাজার টাকা মূল্যের পণ্য ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এ সময় ক্রেতাদের মনে স্বস্তি আনার জন্য দোকানীদের সহনীয় মাত্রায় মুনাফা করার জন্য মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়।

এসময় ঈদ কেনাকাটা করতে আসা কলেজ ছাত্রী তাসপিয়া তাবাসসুম জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশা মাত্রই থ্রি-পিছের দাম অর্ধেকে চলে আসে। যে থ্রি পিছটির দাম চাওয়া হয়েছে ৮ হাজার টাকা পরে সেটি মাত্র দু’হাজার পাঁচ’শ টাকায় কিনছি।

আবু সুফিয়ান মুরাদ জানান, ‘ব্যবসায়ীদের জন্য রোযার মাস সংযমের মাস নয়। এই মাস ব্যবসায়ীদের গলাকাটা ব্যবসার মাস। জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ। তারা চেষ্টা করছে জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য।’

ফেনীর জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে ক্রেতাদের আরো সচেতন হতে হবে। কারণ ক্রেতারা দাম বেশীর জন্য প্রতিবাদ না করে ভালো মনে করে ওই জিনিসটাই ক্রয় করে। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এক টাকা বেশী হলে তার প্রতিবাদ করে।



মন্তব্য চালু নেই