আর্থিক কারণেই মুয়াজ্জিন খুন !

পুরান ঢাকার ইসলামপুরে মসজিদের মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন হত্যাকাণ্ডের জট খুলছে শিগগিরই। এই খুনের পেছনে আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছাড়া আর কোনো কারণ মিলছে না। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় মসজিদের ইমামসহ ৩৫-৪০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মসজিদ কেন্দ্রিক সব বিষয়ই মাথায় রেখে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডে ভাড়াটে খুনি ব্যবহার হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। তবে পাঁচ দিনেও খুনি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন স্বজনরা।

হত্যা মামলার বাদি ও নিহতের ছেলে ইয়াসিন বলেন, ‘বাবা মাসলা-মাসায়েল জানতেন। তিনি কোনো দল করতেন না। তিনি কারো মুরিদও ছিলেন না। পারিবারিকভাবে কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। বাবা যেহেতু ঢাকায় থাকতেন সেক্ষেত্রে আর্থিক কোনো কারণও থাকতে পারে। এই মামলার অগ্রগতি ও ভবিষ্যত নিয়ে আমরা হতাশ।’

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘মুয়াজ্জিন বেলাল হত্যায় মসজিদ কেন্দ্রিক বিষয় ছাড়াও আর্থিক, ব্যক্তিগত এবং জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনো কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এঘটনায় মসজিদের ইমাম, খতিবসহ ৩৫-৪০জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। দ্রুতই এ ঘটনার ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

নিহতের ছোট ভাই আবুল বাশার বলেন, ‘বেলাল অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার মন-মানসিকতা অনেক বড় ছিল। পারিবারিক দিক দিয়ে তার সঙ্গে কারো দ্বন্দ্ব বা আর্থিক সমস্যা ছিল না। তার মৃত্যুতে পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজন খুবই মর্মাহত হয়েছে। গত পাঁচদিন পার হলেও খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা হতাশ।’ দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘নবাবি আমলে তৈরি হলেও মসজিদের সম্প্রত্তি, আথিক লেনদেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব কিছুরই দেখভাল করতেন নিহত মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন। তবে মসজিদের আর্থিক বিষয়ে অনেক দূর্নীতির অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তদন্তের এ পর্যায়ে কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, তবে মূলত, মসজিদ কেন্দ্রীক আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি মার্কেটের কর্তৃত্ব নিতেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের চক্রান্তে মুয়াজ্জিনকে হত্যা করা হতে পারে। এর পাশাপাশি জঙ্গি সম্পৃক্তাসহ আরো কয়েকটি বিষয়েও তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য জানতে মসজিদের ইমামসহ পাঁচজনকে নজরদারির মধ্যে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’

গত সোমবার সকালে পুরান ঢাকার ইসলামপুরে ঝব্বু খানম জামে মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় নিহতের ছেলে ইয়াসিন বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন।



মন্তব্য চালু নেই