আশাশুনির কোলা বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রাম প্লাবিত, ঘের ভেসে গেছে শত শত মৎস্য

গাজি ফারহাদ, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থকে : আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোলা বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানিতে শত শত মৎস্য ঘের ভেসে গেছে এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। শনিবার বিকালে বেড়ী বাঁধের একটি বড় অংশে ধস নামে এবং কয়েক ফুট বসে যায়। ইউপি চেয়ারম্যান এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে প্রাথমিক ভাবে বাঁধ রক্ষার কাজ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানির চাপে প্রায় ২০০ ফুট বাঁধ ভেঙ্গে প্রচন্ড গতির পানি ভিতরে ঢুকতে শুর করে এবং মুহুর্তের মধ্যে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়ে যায়। এলাকার মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মালামাল রক্ষা ও মানুষ-পশুপাখির জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। গতকাল (রবিবার) দুপুরে পুনরায় জোয়ারের পানি ঢুকতে শুরু করলে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা, হিজলিয়া এবং শ্রীউলা ইউনিয়নের কলিমাখালী, মাড়িয়ালা, হাজরাখালী ও লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রাম সম্পূর্ণ কিংবা আংশিক ভাবে প্লাবিত হয়ে যায়। এসব এলাকার হাজার হাজার বিঘা জমির মৎস্য ঘের, অসংখ্য পুকুর, ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তলিয়ে গেছে। ছাগল-গরু ও হাঁস-মুরগিসহ বাড়ির মালামাল রক্ষা করতে এলাকাবাসী হিমশিম খাচ্ছে। আশাশুনি-কোলা সড়কের উপর দিয়ে পানি উপচে পাশের গ্রামে ঢুকতে শুরু করে। মেইন রোডের উপর মাটির বাঁধ দিয়ে পানি ঢোকা বন্দের চেষ্টা করা হয়। গতকাল বাঁধ রক্ষার জন্য কোন ব্যবস্থা করতে না পারায় রাতের জোয়ারের পানি আবারও ঢুকতে থাকলে নছিমাবাদ, বালিয়াখালী, রাধারআটি, কাকড়াবুনিয় ও গাজীপুর গ্রাম হুমকীর মধ্যে পড়েছে। আজ (সোমবার) বাঁধ রক্ষা করতে না পারলে শেষোক্ত গ্রামগুলোর পাশাপাশি ইউনিয়নের বাকী গ্রামগুলোসহ আশাশুনি সদর, চাম্পাফুল ও শোভনালী ইউনিয়নের অংশ বিশেষ প্লাবনের ঝুঁকির মধ্যে রয়ে গেছে। গতকাল (রবিবার) সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ বি এম মোস্তাকিম, প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন, শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসের কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন। ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, আজ (সোমবার) সকালে বাঁধ রক্ষায় কাজ করা হবে। ৫/৭ হাজার শ্রমিক স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করবে। বাঁশ, বস্তাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইনশাল্লাহ পূর্ব অভিজ্ঞতা ও সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সফলতা আসবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। পাউবো’র পক্ষ থেকে কোন সহায়তার আশ্বাস এখনো পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান। এদিকে আশাশুনি সদরের জেলেখালী গ্রামের নিমতলা নামক স্থানে বেড়ী বাঁধের ভাঙ্গর অব্যাহত থাকায় চরম ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই