আশেপাশে বিস্ফোরক আছে কি না, তা জানিয়ে দেবে পালংশাক!

বিস্ফোরক খুঁজে বার করা মুখের কথা নয়। জঙ্গিরা তো আর সবাইকে জানান দিয়ে বিস্ফোরকগুলি ফেলে রাখে না। এমনভাবেই এগুলিকে ঢেকে-লুকিয়ে রাখা হয় যাতে সহজে কেউ টের না পায় আর ঠিক সময়মতো বিস্ফোরণটি ঘটে। প্রযুক্তিবিদরা এতদিনে বিভিন্ন রকম ডিটেক্টর উদ্ভাবন করেছেন বিস্ফোরক শনাক্ত করার জন্য কিন্তু এমআইটি বা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি-র বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি যে প্রযুক্তির হদিশ দিলেন তা সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো।

অতি পরিচিত সবজি পালংশাকই নাকি এক্সপ্লোসিভ ডিটেক্টরের কাজ করবে এবং অতি দ্রুত, এক মিনিটের মধ্যে শনাক্ত করবে বিস্ফোরক। কীভাবে? বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, নাইট্রোঅ্যারোম্যাটিক্স জাতীয় রাসায়নিক শনাক্ত করতে সক্ষম বিশেষ প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি কার্বন ন্যানোটিউব। নাইট্রোঅ্যারোম্যাটিক্স রাসায়নিকটি প্রবলভাবে ব্যবহার করা হয় ল্যান্ডমাইন ও অন্যান্য বিস্ফোরকে। তাই কোনও অঞ্চলে যদি বিস্ফোরক বা ল্যান্ডমাইন পোঁতা থাকে তবে এই রাসায়নিক কিছুক্ষণ পরেই মিশবে সেখানকার ভূর্গভস্থ জল বা আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটারে।

এখন এমআইটি-র বিজ্ঞানীদের বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি ন্যানোটিউবগুলি যদি এমবেড করা হয় সেই অঞ্চলে অবস্থিত পালংগাছের পাতায় এবং ভূগর্ভস্থ জলে যদি থাকে এই রাসায়নিক তবে সালোকসংশ্লেষের প্রয়োজনে মাটি থেকে জল শোষণ করার সময়ে পালং পাতা এই রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসবে। সঙ্গে সঙ্গে একটি ফ্লুরোসেন্ট সিগন্যাল দেবে পালংপাতা আর এই সিগন্যালটি ধরা পড়বে ইনফ্রারেড ক্যামেরায়।

তেমন একটি ক্যামেরার সঙ্গে যদি সংযুক্ত করা যায় স্মার্টফোনের মতো একটি ক্ষুদে কম্পিউটার তবে তেমন সিগন্যাল ধরা পড়লেই তা সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ট পাঠিয়ে দেবে ইউজারকে। সম্প্রতি এই গোটা পরীক্ষাটি সাফল্যের সঙ্গে শেষ করেছেন এমআইটি-র গবেষক দল এবং খুব শীঘ্রই তা প্রকাশিত হবে নেচার মেটেরিয়ালস নামক জার্নালে। এই অভিনব প্রযুক্তির উদ্ভাবনে উচ্ছ্বসিত এমআইটি-র প্রফেসর মাইকেল স্ট্র্যানো। তাঁর মতে, উদ্ভিদের সঙ্গে মানুষের কমিউনিকেশন আরও শক্তপোক্ত হল এই আবিষ্কারে। শুধু তাই নয় মানবসভ্যতায় উদ্ভিদের অবদান আরও বিস্তৃত হল।



মন্তব্য চালু নেই