আস্ত ছাগলখেকো সেই অজগরের মৃত্যু

চট্টগ্রামে জ্যান্ত ছাগল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া অজগরটি অবশেষে মারা গিয়েছে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় অজগরটি মারা যায়। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অজগরটি মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাংলাবাজার বাইপাস এলাকায় খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে আস্ত একটি ছাগল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অজগরটি। পরে স্থানীয় লোকজন ১৫ ফুট দৈর্ঘ্যের সাপটিকে সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসে। তখন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর মঞ্জুর মোর্শেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করে ছাগলটি বের করা হবে। কিন্তু দীর্ঘসময় পার হয়ে গেলেও অজগরটির পেটে অস্ত্রোপচার না করায় সাপটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এদিকে রোববার দুপুরে সাপটি ধরা পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। সাপটিকে এক নজর দেখার জন্য সোমবার চিড়িয়াখানায় ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা যায়। সোমবার বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, যে কক্ষে অজগরটি রাখা হয়েছে সেখানে উৎসুক দর্শনার্থীদের ভিড়। কিন্তু অজগরটি মারা গেছে শুনে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেন। এ সময় অনেক দর্শনার্থী এজন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করেন।

অজগর দেখতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়েল রানা বলেন, গতকাল ফেসবুকে অজগরটি সম্পর্কে জানতে পারি। এত বড় অজগর সাপ সচরাচর দেখা যায় না। তাই অজগরটি দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে জানতে পারি অজগরটি দুপুরে মারা গেছে। সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে হয়ত অজগরটিকে বাঁচানো যেত।

আরেক দর্শনার্থী ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী দিলরুবা আক্তার বলেন, ফেসবুকে ছবি দেখে বন্ধুরা মিলে অজগর সাপটি দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু সাপটি মারা গেছে শুনে খারাপ লাগছে।

তবে গাফিলতির কথা অস্বীকার করে চিড়িয়াখানার পশু চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, সাপটিকে যখন চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছিল তখনই এটির অবস্থা খারাপ ছিল। কারণ আস্ত ছাগল খেয়ে ফেলা এবং দূর থেকে চিড়িয়াখানায় আনার ধকলে সাপটির অবস্থা কাহিল ছিল। আমরা ভেবেছিলাম অবস্থা একটু ভালো হলেই অস্ত্রোপচার করা হবে। কিন্তু সোমবার দুপুর ২টার দিকে সাপটি মারা যায়।

রোববার রাতে কিংবা সোমবার সকালে কেন অস্ত্রোপচার করা হলো না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন সাপটি অস্ত্রোপচার করার মত অবস্থায় ছিল না। এছাড়া অস্ত্রোপচার করতে গেলে সাপটির পেটের ভেতর অনেক অঙ্গ কাটা পড়ত। ফলে সাপটি মারা যেত। তাই অনেক বিষয়ে ভেবেচিন্তে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

এদিকে সোমবার বিকেলে চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর মঞ্জুর মোর্শেদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।



মন্তব্য চালু নেই