ইচ্ছে করেই কি ডুবে গেলেন ফারুক!

‘চলো হাত ধরে মরে যাই, চলো যাই সাগরে, অনেক গভীরে, তারপর ইচ্ছে করে ডুবে যাই’, সালাউদ্দিন লাভলুর ‘ওয়ারিশ’ ছবির জন্য এ গানটি লিখেছিলেন ফারুক হোসেন। কিন্তু কঠিন বাস্তবতা হলো, সেই ফারুক সত্যি সত্যি এবার সাগরে ডুব দিয়েছেন। আর ভেসে ওঠেননি। তরুণ প্রতিভাবান গল্পকার, নাট্যকার, নির্দেশক ফারুক হোসেন। ত্রিশ ছুঁয়েছিলেন মাত্র। কিন্তু প্রতিভার আলো ছড়াতে না ছড়াতেই অন্ধকার এসে সব ঢেকে দিয়ে গেল তাঁর। গত ১৯ জুলাই তিনি সাগর দর্শনে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেই চলে গিয়েছিলেন সমুদ্রস্নানে। ঢেউ তাঁকে ডেকে নিয়ে গেছে অজানায়। আর কিনারায় ফেরেননি তিনি। নিখোঁজ ফারুকের জন্য হঠাৎই শোকের ছায়া নেমেছে নাট্যাঙ্গনে।

নির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলুর সঙ্গে বেশি কাজ করেছেন ফারুক। লাভলু তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ফারুকের যাওয়ার সময় তো হয়নি। কত স্বপ্ন ছিল ফারুকের। ফিল্ম লিখবে, পাল্টে দেবে ফিল্মের স্ক্রিন। যেমন পাল্টে দিয়েছিল নাটকের স্টোরি লাইন। কীভাবে বোঝাই মনকে।’

‘ওয়ারিশ’ ছবির জন্য যে গানটি ফারুক লিখেছিলেন, সেটি সুর করেছিলেন এস আই টুটুল। গেয়েছিলেন টুটুল ও সামিনা চৌধুরী। ছবির কাজ অসমাপ্ত। দুজনকেই ঘরোয়া যেকোনো আয়োজনে এই গানটি গাওয়ার অনুরোধ রাখতে হয়। ১৯ জুলাই রাতে কাতার থেকে ফিরেই দুঃসংবাদটি পান টুটুল। তিনি এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না ফারুক নেই। বললেন, ‘আমার মন বলছে ফারুক ফিরে আসবে।’ আর ঈদের আনন্দের মধ্যে ফারুকের খবরটি শুনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন শিল্পী সামিনা চৌধুরী। পরে ফোনে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। বলেন, ‘ফারুক কেন লিখলো, চলো যাই সাগরে, অনেক গভীরে, তারপর ইচ্ছে করে ডুবে যাই। কেন আমি এ গান গাইলাম। কেন সত্যি সত্যি সাগরে ডুবে গেল। আর ভাল্লাগছে না। আর সমুদ্রের কাছে যাব না।’

ফারুক হোসেনের লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে সালাউদ্দিন লাভলুর ‘জার্নি বাই পলিটিকস’, ‘বাবুল স্যার’ ও ‘ভালো মানুষ’। হিমেল আশরাফের সঙ্গে ‘মিস্টার পাষাণ’ এবং চলচ্চিত্র ‘সুলতানা বিবিয়ানা’। জাজ মাল্টিমিডিয়ার বেশ কিছু ছবির কাজ করছিলেন ফারুক। এর মধ্যে সৈকত নাসিরের ‘পুলিশগিরি’ ও ‘পাষাণ’। আর নতুন চিত্রনাট্যে লিখছিলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’ ও ‘আম্মাজান’ ছবি দুটির কাহিনি।



মন্তব্য চালু নেই