ইনি সকালে মেয়র, দুপুরে মাস্তান, সন্ধ্যায় মাওলানা

আনিসুল হক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র কিংবা অভিভাবক। ইতোমধ্যে তিনি নগরবাসীর মনও জয় করে নিয়েছেন নিজের কাজ দিয়ে। তবে নগরীর সুবিধাভোগী কিংবা দখলবাজদের কাছে তিনি এখন ত্রাস।

মেয়র আনিসুল হক নিজেই বলেছেন, ‘লোকে আমাকে সকালে বলে মাননীয় মেয়র, দুপুরে বলে মাস্তান মেয়র আর সন্ধ্যায় আবার মাওলানাদের মতো দাওয়াত দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়। প্রতিদিন কারণে-অকারণে লোকে আমাকে ফোন করে। তাদের বিভন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে সাহায্য চায়। আমি জনগণের কামলা। তাদের জন্য ব্যস্ত থাকাটাকেই এখন উপোভোগ করি।’

সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মেয়র। ‘ইন্টারনেশনাল চাইল্ডহুড ক্যানসার ডে’ উপলক্ষে আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়েট্রিক হেমেটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগ।

আনিসুল হক বলেন, ‘মানুষ কিভাবে আমার ফোন নম্বর পায় জানি না। তবে তারা আস্থাসহকারে ফোন করে। কেউ ফোন করে বলে- আমার জমি দখল করেছে, উদ্ধার করে দিন। কেউ বলে- আমার স্বামী তালাক দিয়েছে, ব্যবস্থা নিন। সেদিন এক মহিলা ফোন করে বলছেন- আমার স্বামী বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে আমাকে ঘরে আটকিয়ে রেখেছে। যদিও এটা সিটি করপোরেশন বা আমার কাজ না, তারপরও আমি লোক পাঠিয়েছি ব্যাপারটা দেখার জন্য।’

সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ ডাক্তাররা ক্যানসার বিষয়ক প্রোগ্রামে ডেকেছেন, আমি এসেছি। ক্যানসার রোগ বিষয়ে সীমিত জানা-শোনা আছে, তবে এ বিষয়ে আমি স্পেশালিস্ট নই। এক্ষেত্রে আমি বুদ্ধি দিয়ে কিছু করতেও পারবো না। তবে ডাক্তার সাহেবরা ডাকলে গায়ে খেটে কাজ করে দিবো। কারণ আমি একজন কামলা।’

মেয়র বলেন, ‘ডাক্তাররা জানালেন শিশুদের ক্যানসার নিরাময়যোগ্য। একথা জেনে এখন সাহস পাচ্ছি। ২০০০ সালে আমার ছেলের ক্যানসার হয়েছিল। তবে ক্যানসারে তার মৃত্যু হয়নি। মৃত্যু হয়েছিল হার্ট অ্যাটাকে। কেমোথেরাপি নিতে নিতে তার হার্ট দুর্বল হয়ে গিয়েছিল।’

নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের ডাক্তাররা আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে বলেও দাবি করেন মেয়র আনিসুল হক।

তিনি আরো বলেন, ‘ক্যানসারের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে ডাক্তারদের আরো সংগঠিত হয়ে কাজ করতে হবে। দেশে গুণগত মানের ক্যানসারের ওষুধের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর অভিভাবকদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা যেতে পারে। যেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দেয়া যাবে। এছাড়া হাসপাতালগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে।’

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক এমআর খান, বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য কামরুল হাসান খান, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই