ইমামের স্ত্রীর আবদার ‘দাঁড়ি কাটতে হবে’ না কাটালে আত্মহত্যা করব!

‘এ যেন শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা’। একদিকে ধর্মের অনুশাসন, অন্যদিকে স্ত্রীর আবদার। স্ত্রীর মন রাখতে গেলে ধর্ম যায়, আবার ধর্ম বাঁচালে স্ত্রীর মুখ ভার।

স্ত্রীর আজব আবদার। ‘দাড়ি না কাটালে আত্মহত্যা করব’— এমন আবদারে রীতিমতো বিব্রত, বিরক্ত এবং আতঙ্কিত এক ইমাম। স্ত্রীর হুমকির কথা জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠিও লিখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, স্ত্রীর যে এখনই কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন সে কথাও জেলাশাসককে লিখতে ভোলেননি তিনি।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের মেরঠে একটি মসজিদে ইমামের কাজ করেন ৩৬ বছরের আরশাদ বদরুদ্দিন। ২০০১ সালে হাপুর জেলার পিলখুয়া শহরের মেয়ে সাহানাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর পরই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত। সংসারে আগুন লাগানোর ‘মূল চক্রী’আরশাদের লম্বা দাড়ি। লম্বা দাড়ি মোটেই পছন্দ নয় সাহানার। এ নিয়ে আরশাদকে বহুবার বলেছেন।

সাহানার যুক্তি, শাহরুখ-সালমানরাও তো এই ধর্মের, তারা যদি ‘ক্লিন সেভড’থাকতে পারেন, তা হলে আরশাদ কেন নয়! এ ছাড়া তার বয়সও তো বেশি নয়। স্ত্রীর এই আবদার মানতে কোনো ভাবেই রাজি নন আরশাদ।

আরশাদের অভিযোগ, একটা স্মার্টফোন কিনে সাহানা দিন-রাত পরপুরুষের সঙ্গে চ্যাট করেন। আর এই স্মার্টফোনই তার মাথাটা খারাপ করে দিয়েছে। আমি একজন ইমাম। আর ইমামের দাড়ি রাখাটাই নিয়ম। এই কথাটা বার বার স্ত্রীকে বোঝাতে চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই সে শুনতে চাইছে না।

আরশাদ আরও বলেন, “আমাদের চার সন্তান। তারাও বড় হচ্ছে। আমি যদি দাড়ি কেটে ফেলি, ছেলেরাও দাড়ি রাখবে না। আর এটা নিয়মবিরুদ্ধ।”

গোটা বিষয়টি আরশাদ সাহানাকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ফলাফল শূন্য। ঈদের ঠিক পরের দিনই হুমকি দেন, আরশাদ দাড়ি না কাটলে তিনি সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যা করবেন। অশান্তি এমন চরমে পৌঁছায় যে, সাহানা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। কিন্তু আরশাদ দেখে ফেলায় দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন।

সাহানার এই জিদের কাছে হার মানতে রাজি নন আরশাদ। স্ত্রীর মাথা থেকে ‘দাড়ি ভূত’ তাড়াতে শেষমেশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। আরশাদের চিঠির একটি কপি পুলিশ সুপারকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।



মন্তব্য চালু নেই