ইসরায়েলের সেই নেতার সাথে জয়ের বৈঠক

বাংলাদেশে সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ইসরাইলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন. সাফাদি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের সঙ্গে গত বছর তার সাক্ষাৎ হয়েছিল।

বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সাথে দিল্লিতে তার দেখা হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মি. ওয়াজেদের দপ্তরে দুজনের কথাবার্তা হয়।

তবে তার এই দাবির ব্যাপারে মি. ওয়াজেদের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। মি. সাফাদির সাথে সাক্ষাতের সূত্র ধরে বাংলাদেশের পুলিশ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেছে।

মি. চৌধুরী ভারতে গিয়ে মি. সাফাদির সাথে বৈঠক করেছেন এমন খবর বাংলাদেশের সংবাদপত্রে প্রকাশের কয়েকদিন পর গত ১৫ই মে তাকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়।

ইসরায়েলের ঐ নেতাকে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট বলেও এসব খবরে উল্লেখ করা হয়।

ঐ আটকের পর মেন্দি এন সাফাদি বিবিসিকে জানিয়েছিলেন যে, ভারতে আসলাম চৌধুরীর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়েছিল ঠিকই, তবে তাদের মধ্যে কোন গোপন বিষয় নিয়ে কথা হয়নি।

পুলিশ অবশ্য বলছে, তারা মি. চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারের উৎখাতের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পেয়েছে।

কেন এই বৈঠক?

এই বৈঠকের পটভূমি ব্যাখ্যা করে মেন্দি এন. সাফাদি জানান, ৪/৫ মাস আগে তিনি যখন শেষবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যান, সে সময় একজন আমেরিকান বন্ধু দু`জনের মধ্যে এই বৈঠকটির আয়োজন করেন।

ঐ বন্ধু তাকে জানান, যার সাথে দেখা হবে তিনি বাংলাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

এরপর তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে সজীব ওয়াজেদের অফিসে যান।

সাক্ষাতের শুরুতে মি. ওয়াজেদ তাকে বলেন যে তিনি বাংলাদেশে একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি।

কিন্তু সজীব ওয়াজেদ যে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র মি. সাফাদি তখনও তা জানতেন না বলে উল্লেখ করেন।

কী কথা হয় দু`জনার মাঝে?

মি. সাফাদি জানান, বৈঠকে সজীব ওয়াজেদই মূলত কথা বলেন। তিনি শুধু শোনেন।

এসময় মি. ওয়াজেদ তার কাছে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন যে বাংলাদেশের সরকার কত ভাল কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্কে কত ভাল।

মি. সাফাদি দাবি করেন যে সারা বিশ্বে তার ব্যক্তিগত যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মি. ওয়াজেদ সরকারের পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তখন তিনি বলেন, মি.ওয়াজেদের বক্তব্যের সাথে তিনি একমত হতে পারছেন না।

তিনি তাকে বলেন, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের হত্যার খবর দেখতে পাচ্ছেন।

মি. ওয়াজেদ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এ খবরগুলো ভুল।

সব মিলিয়ে বৈঠকটির স্থায়িত্ব ১৫ থেকে ১৬ মিনিটের বেশি ছিল না বলে মি. সাফাদি বিবিসিকে জানান।

-বিবিসি বাংলা



মন্তব্য চালু নেই