ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়

বিষয় নেই ইসলাম যে ব্যাপারে সমাধান বা পথ-নির্দেশনা প্রদান করেনি। একজন পুরুষ এবং একজন নারীর বৈধ সম্পর্ক-বিবাহের মাধ্যেম একটি পবিত্র সংসার রচিত হয়। একটি দাম্পত্য জীবনের সূচনা এবং যাপন নিশ্চত হয়। একটি সংসার বা একটি দাম্পত্য জীবনের নানান মৌলিক উপাদান-বিষয়ের মাঝে স্বামী-স্ত্রী যৌন জীবন অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একজন স্বামী বা একজন স্ত্রী দাম্পত্য জীবনের এই যৌন আয়োজনে সুখি না হলে কোনো ভাবেই সুখি হয় না তাদের দাম্পত্য জীবন। যদিও একটি বিবাহ বা একটি সংসার-দাম্পত্য জীবনের মূল উদ্দেশ্য যৌনতা নয় তবুও মৌলিক এই উপাদানের অভাবে অনেক সময়ই ভেঙ্গে যায় অনেক সংসার। অথচ যৌন শক্তিকেন্দ্রিক এই অভাব-অক্ষমতা কিন্তু চিরস্থায়ী কোনো সমস্যা নয়। অনেক পুরুষ বা নারী নিজের অশুভ কর্মফলের কারণে এমন সমস্যায় ভোগেন আবার অনেকে এমন অভাব-অক্ষমতার শিকার হন বিভিন্ন পারিপার্শিক কারণে। কারণ যাই হোক সমস্যার সমাধান রয়েছে এবং ইসলাম এই প্রকারের সমস্যার সমাধানে বেশ গুরুত্ব প্রদান করেছে।

আল্লাহ মহানের সৃষ্টি অপার। মানুষের খাদ্য-পানীয় হিসেবে অসংখ্য-অগণিত নেয়ামত সৃষ্টি করেছেন তিনি। আমরা মানুষ এই সব খাদ্য-পানীয়কেন্দ্রিক নেয়ামত ছাড়া একেবারেই অচল। আল্লাহ মহান প্রদত্ত এই নেয়ামতের মাঝে এমন কিছু খাদ্য-পানীয় রয়েছে যেগুলো খাওয়ার দ্বারা মানুষের যৌন শক্তি কেন্দ্রিক বিভিন্ন অভাব-অক্ষমতা দূরীভূত হয় এবং যৌন শক্তি বৃদ্ধি লাভ করে। উল্লেখ্য যৌন শক্তি বৃদ্ধি করণ এই প্রক্রিয়াকে দাম্পত্য জীবনের সুখময়তা বৃদ্ধি এবং বৈবাহিক জীবনের নানান সমস্যা-অভাব-অক্ষমতাকে দূর করার পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করাটাই একজন মুসলমানের ইমানি-নৈতিক দায়িত্ব।

হযরত আলী (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (সা.) -এর কাছে এসে অভিযোগ করল যে, আমার ঘরে সন্তানাদি হয় না। একথা শুনে রাসূল (সা.) তাকে ব্যবস্থা দিলেন যে, তুমি ডিম খেতে থাকো।

তিরমিযি শরিফ ও অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে উম্মে মুনযির (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, একবার তিনি নবি কারিম (সা.) -এর সামনে কিছু খেজুর ও বিট লবন পেশ করেন। রাসূল (সা.) উপস্থিত হযরত আলীকে (রা.) খেজুর খেতে নিষেধ করলেন আর বিট লবন সম্পর্কে বললেন যে, এটা থেকে খাও। এটা তোমার জন্য উপকারী। হাদিস বিশারদগণ লিখেছেন যে, হযরত আলি (রা.) -এর তখন চোখে ব্যাথা ছিলো আর চোখে ব্যাথা অবস্থায় খেজুর খাওয়া ক্ষতিকর। এ কারণে রাসূল (সা.) হযরত আলীকে (রা.) খেজুর খেতে বারন করেন। আর বিট লবন সম্পর্কে বলেছেন এটা খাও, এটা তোমার জন্য উপকারী এবং তোমার অক্ষমতা দূর করে দেবে। হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, খাদ্যে সাবধানতা অবলম্বন করে চলা সুন্নাত। আর এটাও বুঝা গেল যে, বিট লবন খেলে দুর্বলতা দূর হয় এবং রতি শক্তিতে স্পন্দন সৃষ্টি হয়। [তিব্বে নববি]

ইমাম গাজালি (রহ.) তার রচিত এহইয়াউল উলুম গ্রন্থে লিখেছেন যে, চারটি বস্তু মানুষের যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে। ১। চড়ই পাখি। ২। ত্রিফলা (হরিতকী, আমলকী ও বহেড়া)। ৩। পেস্তা। ৪। তাজা শাক-সবজি।

জেনে নিন কিছু যৌন শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য। হাকিম আবু নাঈম কিতাবুত তীব গ্রন্থে লিখেছেন, মাখনের সাথে খেজুর মিলিয়ে খাওয়া রাসূল (সা.)এর কাছে খুবই প্রিয় ছিল। আলেমগণ লিখেছেন, মাখনের সাথে খেজুর মিলিয়ে খেলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়, শরীরে গঠন বাড়ে ও কন্ঠস্বর পরিস্কার হয়। মাখন ও মধু একত্রে মিশ্রণ করে খেলে (Pleurisy) তথা বক্ষাবরক ঝিল্লি প্রদাহ রোগের উপকার হয় এবং শরীর মোটা করে। [তিব্বে নববি]

আবু নাঈম ইবনে আবদুল্লাহ জাফর কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সীনার গোশত অন্য সব গোশত থেকে উত্তম হয়ে থাকে। হাদিস বিশারদগণ লিখেছেন যে, এর রহস্য হলো, এই গোশতে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। [তিব্বে নববি]

কোনো কোনো বর্ণনায় আছে যে, হযরত আয়েশা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা.) হাসীস খুব পছন্দ করতেন। “হাসীস” তিনটি উপাদানে তৈরী হয়। খেজুর, মাখন ও জমাট দধি। এ খাদ্য দ্বারা শরীর শক্তিশালী হয় এবং রতি শক্তি বাড়ে। যায়তুন তেল খাওয়া ও মালিশ করা। তিল ও খেজুর একত্রে ব্যবহার করা। কালোজিরা এবং লুবিয়াও যৌন শক্তি বর্ধক। কালোজিরা এবং রসুনও যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে।

হযরত হুযায়ল বিন হাকাম বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, দেহের লোম তাড়াতাড়ি দূর করলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়। [তিব্বে নববি] ডাক্তারদের মতে এই হাদিসে বর্নিত লোম দ্বারা নাভির নীচের অবস্থিত লোমকে বোঝানো হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই