সমমনা ইসলামী ছাত্র সংগঠনসমূহের সংবাদ সম্মেলন

‘ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলন’

‘সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য’-এর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনা, মননশীলতা ও ভাবধারার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকবে এটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে সুশিক্ষাই জাতির মেরুদ- এবং উন্নতির সোপান। আর এটা একমাত্র ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার, অনৈতিকতা ও অস্থিরতা দূর করে ইসলামী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণীত শিক্ষানীতি ও পাঠ্যসূচিতে তার ব্যবস্থা রাখা হয় নি বরং ধর্মীয় শিক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধ ও দেশাত্ববোধক মুসলিম লেখকদের লিখনীসমূহ বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদীদের ধর্মবিদ্বেষী এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী লেখাসমূহ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান পাঠ্যসুচীতে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা বইয়ে গদ্য ও পদ্যের সংখ্যা ১৯৩টি। এসব গদ্য ও পদ্যের মধ্যে হিন্দু লেখক ৮১জন, বিতর্কিত লেখক ৫৬ জন, শতকরা হিসাবে হিন্দু ও বিতর্কিত লেখা প্রায় ৭১ মতাংশ এবং মুসলিম লেখকদের লেখা মাত্র ২৯ শতাংশ; যা খুবই ভয়ঙ্কর ও দুঃখজনক পরিসখ্যান।

ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন বাতিল ও বিতর্কিত সেক্যুলার পাঠ্যসূচি সংশোধন করে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় সমমনা ইসলামী ছাত্র সংগঠনসমূহের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্যের ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র মুখপাত্র মুহা. নাছির উদ্দিন খান।

হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যসুচী ও শিক্ষা আইন বাতিলের দাবিতে ছাত্রঐক্য ঘোষিত কর্মসুচী হচ্ছে-২৫-২৫ মে থেকে ১৫ জুন দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি,. ২৬ মে, সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, ৩০ মে জাতীয় রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের সাথে মতবিনিময়, ২ জুন সিলেট বিভাগীয় ছাত্র গণসমাবেশ। পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগে বিভাগীয় ছাত্র গণসমাবেশ করা হবে এবং ৩ জুন বাদ জুমা বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ মিছিল। সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত ৫ দফা হচ্ছে- শিক্ষানীতি ২০১০ এবং তা বাস্তবায়নে প্রণীত শিক্ষা আইন ২০১৬ এর খসড়া অনতিবিলম্বে বাতিল করা, প্রাক-প্রাথমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষানীতি, শিক্ষাআইন ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কার্যক্রমে অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষাবিদ এবং ইসলামিক স্কলারগণের পরামর্শ করা, পাঠ্যসূচি থেকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সকল গল্প, প্রবন্ধ ও কবিতা বাদ দেয়া, শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম ঐতিহ্য ও ভাবধারার কবি-সাহিত্যিকগণের গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ অন্তর্ভূক্ত করা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্যবৃন্দ (সভাপতিগণ)। তারা হলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর নূরুল ইসলাম আল-আমীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস-এর মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ, ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ-এর মুহাম্মদ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ-এর আব্দুল্লাহ আল মাসউদ খান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া-এর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া-এর মুহাম্মদ আব্দুল কাদীর ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন-এর হাফেজ মুহাম্মদ আল-আমীন।

সেক্রটারীগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর জেনারেল শেখ ফজলুল করীম মারুফ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ-এর মুহাম্মদ ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস-এর জেনারেল মুহাম্মদ আব্দুর রহীম সাঈদ, ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ-এর জেনারেল মুহাম্মদ আবুল হাশিম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ-এর মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া-এর রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া-এর মুহাম্মদ আব্দুর রহমান ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন-এর হাফেজ নেয়ামতুল্লাহ প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই