ইসি অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে

নারী ভোটার সংখ্যা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন (ইসি) অসত্য ও অর্ধ-সত্য তথ্য প্রকাশ করে জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে পাল্টা দাবি করেছে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

বুধবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ দাবি করে সংস্থাটি। গতকাল ইসির প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির পর এ সুজন গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে সুজনের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের প্রতিবাদ জানালো।

সুজনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৮ জুলাই ইসি কর্তৃক প্রকাশিত একটি ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’র প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি সুজন নামের একটি সংস্থার পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে যে, দেশে ভোটার অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে নারী ভোটার আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে অর্থাৎ জেন্ডার গ্যাপ বেড়েছে। সম্মেলনে পুরুষ ও নারী ভোটারের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়েছে-সর্বশেষ ২০১৪/২০১৫ সালে হালনাগাদের পর পুরুষ ও নারী ভোটারের পার্থক্য ১২ শতাংশ অর্থাৎ নারী ভোটার কমে গেছে ১২শতাংশ। সুজনের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত তথ্যাদি সম্পূর্ণ ভুল।’ একইসঙ্গে ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে (ভোটার তালিকাকে) বিতর্কিত না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি নির্বাচন কমিশন’ আহবান জানায়।

সুজনের পক্ষে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, সুজন যেসব তথ্য প্রকাশ করেছে তার উৎস নির্বাচন কমিশন এবং সুজনের প্রকাশিত তথ্যে কোনো ভুল নেই। এছাড়া এসব তথ্য কোনোরূপ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্যও প্রকাশ করা হয়নি। বরং নির্বাচন কমিশনই তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অসত্য ও অর্ধ-সত্য তথ্য প্রকাশ করেছে বলে সুজন মনে করে।

সুজনের দাবি, কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সার-সংক্ষেপ থেকে দেখা যায়, নভেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত নতুন ভোটারের সংখ্যা বেড়েছে ৪৬ লাখ ৯৫ হাজার ৬৫০। এর মধ্যে নারী ভোটার ২০ লাখ ৬৬ হাজার ১৪৪ এবং পুরুষ ভোটার ২৬ লাখ ২৯ হাজার ৫০৬। অর্থাৎ সর্বশেষ চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, নতুন ভোটারদের মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা পুরুষ ভোটার থেকে ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬২ জন কম এবং জেন্ডার গ্যাপ- ১২ শতাংশ। অর্থাৎ ২০১৪-১৫ নিবন্ধিত নতুন ভোটারদের মধ্যে ৫৬ জন পুরুষের বিপরীতে ৪৪ জন নারী। আমরা আমাদের লিখিত বক্তব্যে কোথাও বলিনি যে, মোট ভোটারের মধ্যে জেন্ডার গ্যাপ-১২ শতাংশ । তাই যা আমরা বলি নি কমিশন তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।

সুজনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আমরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছি নতুন ভোটারদের মধ্যে জেন্ডার গ্যাপের তাৎপর্য পুরোপুরি অনুধাবন করার জন্য জেলাভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। দুর্ভাগ্যবশত কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সার-সংক্ষেপের সঙ্গে জেলাভিত্তিক নতুন ভোটারের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি এবং আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেও কমিশন থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি। তবে ১ জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত খসড়া তালিকার সঙ্গে জেলাওয়ারী নারী-পুরুষ ভোটারের বিভাজন পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে জেন্ডার গ্যাপ কিছুটা কম (-১২ শতাংশের পরিবর্তে -১১.৬৭ শতাংশ)। এ থেকে জেন্ডার গ্যাপের প্রকটতা আরও সুস্পষ্ট হয়।’

সুজন তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, কমিশন কর্তৃক সুজেনের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য উপস্থানের অভিযোগটি ভিত্তিহীন, যা আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। আশা করি, কমিশন তার অসত্য ও অর্ধ-সত্য বক্তব্য প্রত্যাহার করবে। একইসঙ্গে আইনানুযায়ী সুষ্ঠুভাবে ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও হালনাগাদের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ইতিমধ্যে কমিশনের বিরুদ্ধে ওঠা সব বিতর্কের অবসান ঘটাবে।বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই