ইয়াসমিনের বেলায় প্রধানমন্ত্রী রাস্তায় নেমেছিলেন, তনু হত্যায় কেন নয়?

‘১৯৯৪ সালে দিনাজপুরে কিশোরী ইয়াসমিন ধর্ষণের করে হত্যার ঘটনার বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাস্তায় নেমেছিলেন। তিনিতো এখন ক্ষমতায়, তাহলে কেন তনু হত্যার বিচার করছেন না? কেন তনু হত্যা নিয়ে একের পর এক নাটক মঞ্চায়ন হচ্ছে?’

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সুশাসনের জন্য নারী’ সংগঠনের আয়োজনে মানববন্ধনে এসব প্রশ্ন রাখেন ড. দিলারা চৌধুরী।

তনুর পোস্টমর্টেম নিয়ে ডাক্তারদের অপেশাদারিত্বের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একবার বলেন আঘাতের চিহ্ন নেই, ১০ দিন পর বলছেন ধর্ষণের আলামত নেই। কিভাবে তনুর মৃত্যু হল সেটা যদি আপনারা না-ই বলতে পারেন, তাহলে কিসের ডাক্তার আপনারা? কে আপনাদের সার্টিফিকেট দিয়েছে ডাক্তারি করার? মৃত্যুর কারণ যদি বের করতে না পারেন তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন।’ এখন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির স্বার্থসিদ্ধির জন্য এসব পোস্টমর্টেমের আখ্যান রচনা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে আমানুল্লাহ রুবি বলেন, ‘একটার পর একটা ঘটনা সরকার ঘটিয়ে যাচ্ছে। একটা ঘটনার মধ্যে আরেকটা ঘটনা। কোনো ঘটনারই সঠিক বিচার হচ্ছে না। ন্যায় বিচার বানচাল করতেই এসব করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণকে বাইরে রেখে সরকার পুশিল আর প্রশাসন দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। প্রতিবাদ আন্দোলন করতে গেলে আমাদের টুঁটি চেপে ধরা হচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের ব্যানার ছাড়া কেউ নিরাপদ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কেউ নিরাপদ না। যারা আওয়ামী লীগের ব্যানার নিয়ে দাঁড়াবে শুধু তারাই নিরাপদ। সাধারণ জনগণের কোনো নিরাপত্তা নেই। ইয়াসমিন, শাহানাদের মতো তনুরাও বিচার পাবে না। এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বহাল রাখছে সরকার।’

নাজমুন নাহার নামে এক পেশাজীবী নারী বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে, গৃহে, স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, বাইরে কোথাও আমরা নিরাপদ নই। আমার মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে আমি দুঃশ্চিন্তায় থাকি। অফিসে কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। সারাক্ষণ ছটফট করতে থাকি। মেয়েকে নিয়ে এতটাই দুঃশ্চিন্তায় থাকতে হয় কোনো কাজেই মনোনিবেশ করা সম্ভব হয় না। আমরা নিরাপত্তা চাই। জীবনের নিরাপত্তা, সম্ভ্রমের নিরাপত্তা, বেঁচে থাকার নিরাপত্তা।’

মানববন্ধনে বক্তরা প্রয়োজনের আইন পরিবতর্ন করে তনু হত্যাসহ সকল হত্যা ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সংগঠনটির জেনারেল সেক্রেটারি শিউলি করিম, সদস্য ইকরাম কবির উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই