ঈদের আনন্দে বাধা হতে পারে বৃষ্টি

আনন্দ ধারার হিল্লোল তুলে আবারও দুয়ারে ঈদুল ফিতর। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দেশে ঈদ উদযাপিত হবে। তবে আষাঢ়ের বৃষ্টি ঈদের দিনও অব্যাহত থেকে আনন্দে বাধা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

সমুদ্রবন্দরগুলোতে বুধবারও তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদফতর। একই সঙ্গে বুধবার সকাল থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া উপকূলীয় কয়েকটি জেলায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘বুধবার দেশের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে বেশি মাত্রায় বৃষ্টি থাকবে। তবে ওইদিন থেকে ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর বিভাগে বৃষ্টির তীব্রতা কমে আসবে।’

দেশের উপর মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) সক্রিয়, সঙ্গে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে অবস্থানরত লঘুচাপের কারণে দেশে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন এ আবহাওয়াবিদ।

সাধারণত মসজিদ ছাড়াও ঈদের জামাত খোলা আকাশের নিচে ঈদগাঁয়ে অনুষ্ঠিত হয়। তাই ঈদের দিন বৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়বেন মুসল্লিরা। বৃষ্টির কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে না পারলে শিশুসহ সব বয়সের মানুষের ঈদ আনন্দে ভাটা পড়বে।

এদিকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে টেকনাফে ১৪৮ মিলিমিটার। এ সময়ে ঢাকায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।

অপরদিকে বুধবারও নদীবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ।

বুধবার সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও কাছাকাছি বিহার এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহার এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমূদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

ভারি বৃষ্টি ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।



মন্তব্য চালু নেই