উখিয়ায় কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত-৭

কক্সবাজারের উখিয়ার সর্বত্রে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এসব কুকুরের অবাধ বিচরণ নিয়ে জনমনে শংকার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, জলাতংক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে স্কুলগামী কচিকাচা ছাত্রদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল। এ পর্যন্ত শিশু, কিশোর, বয়োবৃদ্ধ সহ ৭ জন আক্রান্ত হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ২০১২ সালের শেষের দিকে এখানে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের ফলে বেশ কয়েক বছর মানুষ নি:সন্দেহে চলাফেরা করতে সক্ষম হলেও বর্তমানে কুকুরের উপদ্রব এতই বেড়ে গেছে যে, যা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সাধারণ জনগণের অভিযোগ, পথে ঘাটে, লোকালয়ে, হাট বাজারে যে কোন সময় কুকুর কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা নিয়ে মানুষ, স্কুল, কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের চলাফেলা করতে হচ্ছে। কুকুরের তান্ডবে আক্রান্ত হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের দিনমজুর মিয়া হোছন (৫৫) জানায়, সে মরিচ্যা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুকুর কর্তৃক আক্রান্ত হয়।

উখিয়া সদর হাসপাতালে গিয়ে ভেকসিন না পাওয়ায় তাকে কক্সবাজার হাসপাতাল থেকে ভেকসিন দিতে হচ্ছে। বিনা মূল্যে ভেকসিন সরবরাহ দিলেও আসা-যাওয়া বাবদ তাকে ৩ গুণ খরচ বহন করতে হচ্ছে।

রাজাপালং ইউনিয়নের লম্বাঘোনা গ্রামের সমিরণ বড়–য়া জানায়, তার ১২ বছরের ছেলে আশিষকে কুকুরে কামড় দিয়েছে। উখিয়ার ফার্মেসী থেকে ভেকসিন দিতে গিয়ে তাকে ৫ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। সচেতন মহলের অভিযোগ, বিত্তবানদের পরিবারগুলো তা সামাল দিতে পারলেও মধ্যবিত্ত ও নিুবিত্তের আক্রান্ত লোকজন এত ব্যয়বহুল খরচ বহন করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

এভাবে গত দুই মাসে অসংখ্য লোকজন কুকুর কর্তৃক আক্রান্ত হলেও এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৭ জন বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বাদ বাকী আক্রান্তরা অজ্ঞতা বা অর্থাভাবে ভেকসিন নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা বিভিন্ন ওঝা, কবিরাজ ও বৈদ্যের নিকট থেকে ঝাড়ফোকড় ও বনাজি ঔষুধ সেবন করে নিরাময় হওয়ার চেষ্টা করলেও আক্রান্ত ব্যক্তিরা যে কোন সময় জলাতংক রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ ফিরুজ খান।

উখিয়া বাজারের ব্যবসায়ী পরিমল সেন জানান, ঝাঁক বাঁধা বেওয়ারিশ কুকুর কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে দোকান থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায়, ক্রেতা সাধারণকে ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটা করতে হচ্ছে। একই অভিযোগ মালভিটা পাড়া গ্রামের হাজী আব্দুল মান্নানের।

তিনি জানান, পায়ে হেঁটে বাড়ি যাওয়ার সময় কখন কুকুরে কামড় দেয় এ নিয়ে সর্বদা আতংকে থাকতে হয়। উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাষ্টার হারুন অর রশিদ জানান, বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি পৌছতে পারল কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগতে হয়।

বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অফিসের কম্পাউন্ডার ফয়েজ উল্লাহ জানান, দীর্ঘ দিন ধরে এ অফিসে কর্মকর্তা নাই। তাই এ ব্যাপারে তিনি কিছু মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ ফিরুজ খান জানান, ভেকসিন না থাকার কারণে তিনি আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে পারছেন না।



মন্তব্য চালু নেই