উখিয়ায় প্রতিবন্ধীর ছেলেকে অপহরণ করে মালয়েশিয়ায় পাচার

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উপকুলীয় এলাকার কিছু সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্ররা পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মোজাম্মল হক (১৩) কে অপহরণ পূর্বক সাগরপথে পাচার করে দেওয়ায় ৫৪ দিনেও শিশু সন্তানের খোঁজ না পেয়ে অসহায় মাতা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফিজ বদিউল আলমের ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ ছেলের হাত ধরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পিতা বদিউল আলম রুজি-রোজগারের অন্বেষণে ছোটখাট ব্যবসা করে আসছিল। চলার পথে একমাত্র দিশারী শিশু সন্তানকে হারিয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বদিউল আলম আরো একবার অন্ধ হয়ে গেল।

নিখোঁজ সন্তানের মাতা ফাতেমা বেগম জানান, গত ২৩ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পিতাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সওদাগরপাড়া রাস্তা নামক এলাকায় পৌছলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা ২/৩ জন পাচারকারী মোজাম্মেল হককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় তার আত্মচিৎকারে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পিতা উদ্ধারের জন্য আকুল হয়ে উঠলেও অন্ধত্বের কারণে ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেনি।

অসহায় মাতা ফাতেমা বেগম আরো জানায়, পরে পাচারকারী চক্র মুঠোফোনে তার নিকট থেকে ছেলের মুক্তিপণ বাবদ ১ লক্ষ টাকা দাবী করে। অপহরণকারীদের কথামতো মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় শিশু সন্তানের দেখা মিলছে না আজ ৫৪ দিন ধরে। এ ব্যাপারে ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী এবং কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে একটি মামলা দায়ের করে।

গত সোমবার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মানবপাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সন্তানহারা ফাতেমা বেগম অপহরণকারী মানবপাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী সহ তার নিখোঁজ সন্তানের ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের দাবী জানালে, অনুষ্ঠানের মূল বক্তা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রিয়াজুল হক বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

এ সময় সেমিনারে উপস্থিত উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান বলেন, মানবপাচারকারীদের নাম, ঠিকানা উলে¬খ করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ হাতে আসলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই