এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে কিউবায় যুগান্তকারী অগ্রগতি

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কার্যকরীভাবে মা থেকে সন্তানের শরীরে এইচআইভি এবং সিফিলিসের সংক্রমণ ঠেকাতে পেরেছে কিউবা। আর দেশটির এ যুগান্তকারী অর্জনের খবর নিশ্চিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্ত অনুযায়ী, মা থেকে শিশুর শরীরে এইচআইভি ঠেকাতে হলে দেশগুলোকে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে এইচআইভি ও সিফিলিস আক্রান্তের হার ৫০টিরও কমে নামিয়ে আনতে হবে। কেবল তাই নয়; অন্তঃসত্ত্বা নারীরা এইচআইভি কিংবা সিফিলিস আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করার হার অন্তত ৯৫ শতাংশ হতে হবে। যারা আক্রান্ত তাদের ৯৫ ভাগকে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, এরইমধ্যে কিউবা সেসকল শর্ত মানতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৩ সালে এইচআইভি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে মাত্র দুজন শিশু। আর সিফিলিস আক্রান্ত হয়ে জন্মেছে ৫ জন।

কিউবার এ সফলতার ব্যাপারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব মার্গারেট চ্যান বলেন, ‘এটি হলো স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বড় অর্জনগুলোর একটি।

_83954425_f0025090-obstetric_examination-spl

 

প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ১৪ লাখ এইচআইভি পজিটিভ নারী গর্ভধারণ করেন। আর প্রতিবছর সিফিলিসে আক্রান্ত হন প্রায় ১০ লাখ নারী। গর্ভাবস্থা থেকে শুরু করে সন্তান জন্মদান, দুগ্ধদান পর্যন্ত মা থেকে সন্তানের শরীরে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা ১৫ থেকে ৪৫ ভাগ। যদি তাদের অ্যান্টি রিট্রোভাইরাল মেডিসিন দেয়া হয় তবে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা ১ শতাংশে নেমে আসে বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

cuba-hiv-transmission

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে এইচআইভি আক্রান্ত প্রতি ১০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর ৭ জন অ্যান্টিরিট্রোভাইরাল মেডিসিন গ্রহণ করে থাকেন যেন তাদের সন্তানদের মাঝে ভাইরাস না ছড়াতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৩ সালের হিসেব অনুযায়ী এইচআইভি আক্রান্তের ৯০ শতাংশের জন্য দায়ী ২২টি দেশের মধ্যে আটটি দেশ শিশুদের এইচআইভি আক্রান্তের হার ৫০ শতাংশেরও বেশি কমিয়ে এনেছে। ২০০৯ সাল থেকে তারা এ সংখ্যা কমিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

660_HIV

আর ২০১৪ সাল নাগাদ ৪০টিরও বেশি দেশ সিফিলিস আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের গর্ভকালীন সেবা দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গর্ভবতী মা থেকে সন্তানের মাঝে এইচআইভি ছড়ানো ঠেকানোর ক্ষেত্রে কেবল কিউবাই সফলতা অর্জন করেছে তা নয়। অন্য দেশগুলোও এক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করছে জানিয়ে চ্যান বলেন, কিউবাকে অনুসরণ করে অন্যরাও পুরোপুরিভাবে মা থেকে সন্তানের মাঝে এইচআইভি ও সিফিরিস সংক্রমণ ঠেকাতে পারবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি জানান, ২০১৪ সালে বিশ্বজুড়ে এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে। আর এ সংখ্যা ২০০৯ সালের থেকে প্রায় অর্ধেক।

চ্যান বলেন, বছরে এইচআইভি আক্রান্ত শিশু জন্মহার ৪০ হাজারে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।



মন্তব্য চালু নেই