একটা করে খুন করেই আইএস দফতরে ছবি পাঠায় জঙ্গিরা !

ঢাকায় জঙ্গি হামলার ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ সরকার টানাপড়েনের মধ্যে। হামলা চালাল কারা? আইএস? লস্কর? নাকি জেএমবি? খুব স্পষ্ট করে এখনও কিছু বলতে পারছে না ঢাকা।

নিজেদের নীতিতে অটল থেকে বাংলাদেশের প্রশাসন বলছে, স্থানীয় জঙ্গিদেরই কাজ। আইএস নেই বাংলাদেশে। কিন্তু জঙ্গিহানার পর চক্রান্তের যে সব চিহ্নকে নানা দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, তাতে আইএস যোগের প্রমাণ আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহল তেমনই মনে করছে। এই হামলা যে আইএস-এরই কাজ, তা কী কী দেখে বোঝা যাচ্ছে?

১. নিজেরা হামলা না চালালে আইএস কখনও সেই হামলার দায় স্বীকার করে না। ঢাকায় হামলা হওয়ার পর আইএস নিজেদের সংবাদমাধ্যম আমাক নিউজ এজেন্সিতে জানিয়েছে, এই হামলা তাদেরই।

২. ঢাকায় রেস্তোরাঁয় যখন হামলা হয়েছে, পণবন্দিদের যখন ভিতরে একে একে খুন করা হচ্ছে, তখনই আমাক-এর ওয়েবসাইটে রেস্তোরাঁর ভিতরের ছবি একে একে আপলোড হতে শুরু করে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদক, সারা ক্ষণ নজর রেখেছিলেন আমাক-এর সাইটে। নিজের অভিজ্ঞতা তিনি টুইটারে ব্যক্ত করেছেন।

সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ঢাকার হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ঠিক যে সময় যে ঘটনা ঘটেছে বলে আঁচ করা হচ্ছে, তার খুব কাছাকাছি সময়েই আমাকে ভেসে উঠছিল মৃতদের ছবি। রেস্তোরাঁর ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় একের পর এক নিথর দেহ পড়ে থাকার ছবি অভিযান চলাকালীনই আপলোড হচ্ছিল আমাকের ওয়েবসাইটে। অর্থাৎ গুলশনের জঙ্গিরা খুন করেই সেই ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছিল আইএস-এর কোর মিডিয়া অপারেশন টিমের কাছে। তারা সঙ্গে সঙ্গে ছবি আপলোড করছিল আমাক নিউজ এজেন্সির ওয়েবসাইটে।

৩. শুধু খুনোখুনির ছবি নয়, হামলার বিভিন্ন বিবরণও জঙ্গিরা আইএস সদর দফতরে পাঠাচ্ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশের বাহিনী যখন রেস্তোরাঁ ঘিরে ধরে অভিযান চালাচ্ছে, আমাক নিউজ এসেন্সি তখনই জানিয়েছিল ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসন তখনও কিন্তু ২০ জনের মৃত্যুর কথা জানত না। ৬-৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ঢাকা সূত্রে খবর আসছিল। কিন্তু অভিযান শেষে দেখা গিয়েছে, ২০ জন পণবন্দিকেই খুন করেছে জঙ্গিরা।

৪. প্যারিস জঙ্গিহানার সঙ্গে ঢাকা হামলার অনেক মিল পাওয়া গিয়েছে। হামলার ধরন দেখে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলা আইএস-এরই। প্যারিস হামলার আগে হামলাকারী জঙ্গিদের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। আইএস-ই প্রকাশ করেছিল সেই ছবি। যে ক’জন প্যারিসে হামলা করেছিল, তাদের এক সঙ্গ দেখা গিয়েছিল সেই ছবিতে। তবে তারা কী ঘটাতে চলেছে, জানা যায়নি।

ঢাকা হামলার আগেও একই ভাবে নিবরাস ইসলাম, শামিম মুবাশির, রোহন ইমতিয়াজদের ছবি চলে এসেছিল প্রকাশ্যে। ছবিতে তাদের আইএস-এর পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।



মন্তব্য চালু নেই