একটি খুন, কয়েকটি বুলেট ও তোতাপাখির সেই অজানা গোপন রহস্য!

মিস মার্পল থাকলে এমন রহস্যভেদ করতে পারতেন কি!

খুন একটা হয়েছে বটে, সন্দেহভাজনও রয়েছে চোখের সামনে। অথচ ধরা যাচ্ছে না!
রয়েছে খুনের প্রত্যক্ষদর্শী। খুনিকে দেখেছে সে। সারা দিন ধরে বলেই চলেছে সে কথা। কিন্তু বহু বার শোনার পরেও বোঝা যাচ্ছে না, কে খুনি!

ফলে দিনকে দিন বেড়েই চলেছে রহস্য।

গত বছরের মে মাসে বাড়িতে খুন হন বছর পঁয়তাল্লিশের মার্টিন ডুরাম। বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল তাঁর মাথা। রক্তে ভেসে যাওয়া মার্টিনের পাশেই পড়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী গ্লেনা। স্বামীর মতো তাঁর মাথায় গুলি লাগলেও ওই ঘটনায় কোনওক্রমে বেঁচে যান তিনি। তবে এই খুনের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ইতিমধ্যেই পুলিশের নজরে রয়েছে গ্লেনার নাম। আর প্রত্যক্ষদর্শী? সে-ও আছে! বাড়ির পোষা তোতাপাখি ‘বাড’ই এই খুনের প্রত্যক্ষদর্শী। সারাদিন ধরে গালি দিতে দিতে মার্টিনের গলা নকল করে সে চেঁচিয়ে যাচ্ছে, ‘গুলি চালিও না!’ তবে কাকে গুলি করতে বারণ করছে, কেনই বা বারণ করছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।
আপাতত বাড নামের এই আফ্রিকান গ্রে প্যারোটকে নিয়ে মিশিগানের এন্সলি টাউনশিপে শোরগোল পড়ে

গিয়েছে। ওখানেই তো থাকতেন মার্টিন। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলেও এই খুনের ঘটনা নিয়ে নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার চলছে। মার্টিনের আত্মীয়দের দাবি, খুনের সময়কার ঘটনা বাডের স্মৃতিতে এমন ভাবে গেঁথে গিয়েছে যে, বার বার ওই কথাই বলে চলেছে সে। তাঁরা জানিয়েছেন, মার্টিন ও গ্লেনা— দু’জনেরই গলা নকল করে চলেছে বাড। মার্টিনের মায়ের দাবি, “বাডের মতো গালিগালাজ করতে আর কেউ পারে না। এক বার কিছু শুনলে তা-ই বলতে থাকে সে।” মার্টিনের বাবার কথায়, “ঘটনার সময় বাড ওখানেই ছিল। তাই সব কিছু মনে রয়েছে তার। আর সেটাই বার বার বলে চলেছে সে।” এ কথায় সায় দিয়েছেন মার্টিনের প্রাক্তন স্ত্রী ক্রিস্টিনা কেলার। মার্টিনের মৃত্যুর পর ইদানীং ক্রিস্টিনার কাছেই থাকছে বাড। ক্রিস্টিনা বলেন, “বাডের চিৎকার শুনে মনে হচ্ছে, দু’জন এমন মানুষ ঝগড়া করছেন যাঁদের আমি চিনি।”

প্যারট বিশেষজ্ঞ ডোরিন প্লটকোস্কি জানিয়েছেন, আফ্রিকান গ্রে প্যারট প্রজাতির পাখিরা এক বার কোনও কিছু শুনলেই তা আওড়াতে থাকে। তাঁর দাবি, নিশ্চয়ই কোনও মহিলা ও পুরুষের মধ্যে ঝগড়াঝাটির কথা কানে এসেছিল তার। তাই নকল করে শোনাচ্ছে সে। নেওয়েগো কাউন্টির আইনজীবী রবার্ট স্প্রিংস্টিড জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এখনও সেই ফুটেজ তাঁর হাতে আসেনি। মিশিগান পুলিশ তদন্ত শেষ করলে তবেই এ নিয়ে চার্জ গঠন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। স্প্রিংস্টিড বলেন, “সম্ভাব্য কারণের উপর ভিত্তি করে চার্জ গঠন করাই যায়। তবে আমার মনে হয়, শুধুমাত্র সম্ভাব্য কারণ নয়, একমাত্র প্রমাণ মিললে তবেই চার্জ গঠন করা উচিত।”

মার্টিনের খুনে প্রধান সন্দেহভাজন গ্লেনার অবশ্য দাবি, গুলি চালানোর কথা কিছুই মনে নেই তাঁর। ঘটনার পর হাসপাতালেই প্রথম জ্ঞান ফেরে তাঁর। পুলিশকে সে কথা জানিয়ে তাঁর আরও দাবি, “আমার স্বামীকে আমি খুন করিনি।” তদন্ত চলছে। এবং পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে রহস্য।



মন্তব্য চালু নেই