একলা লড়বে শরিকরা, সমঝোতার আশাও ছাড়ছে না

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহাজোটের শরিক রাজনৈতিক দলগুলো। এরইমধ্যে অনেক শরিক দল নিজেদের প্রার্থী চূড়ান্তও করেছে। তারপরও শেষ সময়ে মহাজোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার আশা ছাড়ছে না কেউই।

জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌর নির্বাচনে মহাজোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ সবগুলো পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর থেকে অন্যান্য শরিকরা নির্বাচনে স্ব স্ব দলের শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণের কথা ভাবছে। সেজন্য অধিকাংশ শরিক দল তাদের প্রার্থীতা বাচাই ও চূড়ান্ত করছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা না হলে নিজেদের সাংগঠনিক ক্ষমতার উপর ভিত্তি করেই প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার কথা ভাবছে শরিকরা। তবে সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের মত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রার্থী ভাগাভাগি করতেও রাজি আছে তারা।

জানা যায়, তৃণমূলের সুপারিশ ও দলের সভাপতির জরিপ রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে দুই দফা বৈঠক শেষে ২৩৫ পৌরসভায় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সমঝোতা না হওয়ায় ওয়ার্কাস পার্টি, জাসদ, তরিকত ফেডারেশন, বাসদসহ অন্যান্য শরিক দলগুলো বেশ কয়েকটি পৌর সভায় দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। জোটগত কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও শরিকরা তাদের পছন্দমতো সমমনা প্রার্থীকে সমর্থন করবে।

এ ব্যাপারে মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘যেহেতু সমঝোতা হয়নি তাই আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচনের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করছি। সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা থাকলেও আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত ২০টি পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। সাংগঠনিক ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে অন্যান্য পৌরসভায়ও প্রার্থী চূড়ান্তের প্রস্তুতি চলছে।’

যেসব পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে না, সেসব পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন করবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমঝোতা না হলে আমাদের সমমনা অন্য প্রার্থীকে সমর্থন করতেই পারি। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগও হতে পারে, আবার জোটের অন্য শরিকের প্রার্থীও হতে পারে। তবে জামায়াত-বিএনপি জোটের কোনো প্রার্থীকে আমরা সমর্থন করব না।’

বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো পৌর নির্বাচনে আমরাও দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করছি। সমঝোতা না হলে আমরাও এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।’

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন জোটগতভাবে হয়েছে বলে স্থানীয় নির্বাচনও হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে আমরা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলাম যদি স্থানীয় নির্বাচন জোটগতভাবে হয় তাহলে আমরা জোটে থাকব। আর যদি না হয় তাহলে আমরা দলীয় প্রার্থী দেব।’

তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে মহাজোটের প্রধানতম শরিক দল। তারা পৌর নির্বাচনে একক ভাবে অংশগ্রহণ করবে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরাও তাদের মতো দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। সেজন্য প্রার্থীতা চূড়ান্ত করছি। যেসব পৌরসভায় আমাদের দলীয় প্রার্থী থাকবে না, সে সব পৌরসভায় আমরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন করব।’

সাম্যবাদী দলের প্রধান দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে আমরা দলীয় প্রার্থী দিচ্ছি। তবে সমঝোতার কোন সম্ভাবনা থাকলে আমরা রাজি আছি।’

এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হনিফ বলেন, ‘সর্বশেষ অনুষ্ঠিত দলের কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সভায় একটি পৌর নির্বাচন বোর্ডও গঠন করা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা আমাদের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছি।’



মন্তব্য চালু নেই